নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ মার্চ, ২০১৮

লাল-সবুজে আসছে প্রথম মেট্রোরেল

দৃশ্যমান হচ্ছে প্রকল্প

প্রায় ২ কোটি মানুষের চাপে জর্জরিত, যানজটে নাকাল ঢাকা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন ও বৃহত্তর উন্নয়নের মধ্য দিয়েই যা থেকে মুক্তি সম্ভব। আর সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছে মেট্রোরেল।

২০১৯ সালের মধ্যে চালু করার ওপর জোর দিয়ে উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে এখন জোরেশোরে কাজ চলছে। আর লাল-সবুজকে প্রাধান্য দিয়ে প্রথম মেট্রোরেল ডিজাইন করা হচ্ছে।

প্রকল্প সূত্র মতে, উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট ও মতিঝিল। ২০ দশমিক ১ কিলোমিটারের এই পথে মেট্রোরেল থামবে ১৬ স্টেশনে। এটি পরিচালনা করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল আসতে সময় লাগবে মাত্র ৩৭ মিনিট। বিদ্যুৎচালিত এ ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় গড়ে ৩২ কিলোমিটার। এ রুটে ৬টি করে বগির ১৪টি ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটিতে ১ হাজার ৬৯৬ জন যাত্রী চলতে পারবে। এর মধ্যে আসনে বসতে পারবে ৯৪২ জন এবং দাঁড়িয়ে থাকবে ৭৫৪ জন। এতে প্রতি ঘণ্টায় উভয় দিক থেকে ৩০ হাজার করে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে।

তারা আরো বলছেন, ২০১৯ সালে যখন এটি প্রথম চালু হবে, তখন সাড়ে ৩ মিনিট অন্তর মেট্রোরেল ছেড়ে যাবে। চাহিদা বেশি থাকলে ২ মিনিট পর পরও ট্রেন ছাড়া যাবে।

সূত্র মতে, উত্তরা তৃতীয় ফেজ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত এ প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, এখানে লাল এবং সবুজ রঙের প্রাধান্য রেখেই মেট্রোরেলের ডিজাইন করা হচ্ছে। প্রথম দিকে আমরা ৬টি বগি দিয়ে ট্রেন চালু করছি। তবে সেখানে একটি ব্যবস্থা রেখে দিয়েছিÑ যাতে ভবিষ্যতে ৮টি বগি দিয়ে চালানো যায়।

তিনি বলেন, যে কন্ট্রোল সিস্টেম আমি ইনস্টল করছি, সে অনুযায়ী সাড়ে ৩ মিনিট পর পর ট্রেনগুলো যেতে থাকবে। তবে চাহিদা থাকলে দেড় মিনিট কমিয়ে ২ মিনিট করা যাবে। সে ব্যবস্থাও রেখে দিয়েছি। অর্থাৎ দুই মিনিট পর পর ট্রেন চালাতে পারব।

সড়কের ডিভাইডার বরাবর সরু পিলারের ওপর বসানো রেলওয়ে ট্র্যাকের ওপর দিয়ে এই মেট্রোরেল চলবে। তবে সড়কের মাঝখান দিয়ে গেলেও এতে নিচের রাস্তার কোনো প্রভাব পড়বে না।

তিনি বিশ্বাস করেন, মেট্রোরেল চালু হলে এই রুটে যানজট অভাবনীয় পর্যায়ে কমে আসবে। কারণ প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী মেট্রোরেলে পার হতে পারবে। এম এ এন সিদ্দিক আরো বলেন, ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট টাইমেই চলাচল করবে। ট্রেনটি যদি ১০টা ৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডে ছাড়ার কথা থাকে, তবে অবশ্যই ৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডে ছাড়বে।

এদিকে রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে এবং নগরবাসীর সময় বাঁচাতে স্বপ্নের মেট্রোরেল চালুর কাজ চলছে। সরকার ২০১৯ সালের মধ্যেই এমআরটি লাইন-৬ এর একাংশের কাজ শেষ করতে চায়। উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে এখন জোরেশোরে কাজ চলছে।

আগারগাঁও থেকে মিরপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের দৃশ্যমান কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। রোকেয়া সরণির পরিকল্পনা কমিশনের কাছ থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়কের মাঝ বরাবর ব্যারিকেড দিয়ে এমআরটি প্রকল্পের কাজ চলছে দিন-রাতে। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে এরই মধ্যে এ প্রকল্পের কাজে সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ২৫ শতাংশ।

উল্লেখ্য, মেট্রোরেল প্রকল্পে যে ১৬টি স্টেশন হবে সেগুলো হচ্ছে উত্তরা-উত্তর, উত্তরা-সেন্টার, উত্তরা-দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মেট্রোরেল,ঢাকার মেট্রোরেল,লাল-সবুজ,যানজট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist