রফিক আহমদ খান, ফ্রিল্যান্স লেখক
সে যেনো কূলকিনারাহীন দরিয়ায়
মেয়েটিকে যেদিন প্রথম দেখি, সেদিন আমার বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান ছিলো। সে ছিল কিশোরী। বরবরণ কালেই জেনেছি সে সম্পর্কে শ্যালিকা হয়। আমাদের বাড়িতে, আমার শ্বশুর বাড়িতে আরো কয়েকবার দেখা হয়েছিলো ওর সাথে। তার 'ভাইয়া' 'ভাইয়া' ডাকে থাকতো গভীর শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা। সে সব দশ বছর আগের কথা।
সাত বছর আগে মেয়েটির বিয়ে হয়। তার পাঁচ-ছয় বছর বয়সী একটি ফুটফুটে মিষ্টি মেয়েও আছে। দেশে থাকলে হয়ত আমি তার বিয়েতে উপস্থিত থাকতাম। প্রবাসে থাকায় সেটা হয়নি। তার সাথে আর দেখাও হয়নি। আজ আমার স্ত্রীসহ তাকে দেখার জন্য তার শ্বশুর বাড়িতে গেছি। সে কত খুশি তা বলার ভাষা নেই। কোথায় বসাবে না কোথায় বসাবে, কী খাওয়াবে না কী খাওয়াবে; সেই চিন্তায় অস্থির সে। তার আনন্দের শেষ নেই আজ, তার মনিআপুর জামাই এসেছে তার শ্বশুর বাড়িতে।
না। আসলে আজ এমন খুশি সে হয়নি! হবেই বা কেমনে! তার শ্বশুর বাড়িতে গেলেও বোনটির সাথে যে দেখা হয়নি আমার। হবেই বা কেমনে! আমি যখন তার শ্বশুর ঘরের সামনের রুমে বসে আছি, সে তখন তাদের থাকার রুমে, বসে কী শুয়ে আছে; পাথরবুকে নিয়ে। যে পাথরটির ওজন পৃথিবীর ওজনের চেয়ে বেশি। তার মধুর ঘরটা আজ তার কাছে কূলকিনারাহীন দরিয়া।
দুদিন আগে বলা নয় কওয়া নয় তার সুখ, তার পৃথিবী, তার জীবনসঙ্গী প্রাণপ্রিয় স্বামী হঠাৎ স্ট্রোক করে তাকে ছেড়ে চলে গেছে পরপারে। ছেড়ে গেছে সব মায়ারবন্ধন।(গল্প নয় : জীবন থেকে নেওয়া)
পিডিএসও/রিহাব