সম্পাদকীয়

  ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

কঠোর হচ্ছে পুলিশ

ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, আইন না মানার প্রবণতা নিরাপদ সড়ক তৈরিতে বড় একটি বাধা। আর সে কারণেই ঢাকাবাসী যাতে আইন মেনে চলে সে বিষয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে আরো বলা হয়েছে, আইন মানতে নগরবাসীকে বাধ্য করা হবে। ঢাকা শহরের প্রধান সড়কে লেগুনা চলতে দেওয়া হবে না। হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহীকে তেল সরবরাহ করা যাবে না। স্টপেজেই বাস থামাতে হবে অন্যত্র নিষিদ্ধ থাকবে।

আমরা এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে সাধারণের যানবাহন লেগুনার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করে বন্ধ করা ঠিক হবে না। এই ঘোষণায় গতকাল বিভিন্ন সড়কে লেগুনা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে পড়ে। যেসব সড়কে বাস চলাচল করে না সেসব সড়কেই সাধারণত লেগুনা চলে। এর যাত্রীর বেশিরভাগই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং নিম্নআয়ের মানুষ।

এছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিএমপি যে উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রশংসা করতেই হয়। দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে সর্বশেষ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর বিষয়টি যে তাদের চেতনাকে নাড়া দিতে পেরেছে—এটাই বা কম কিসে! কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মতো এ দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষ যে নিরাপদ সড়ক চায় সে ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়।

সম্ভবত সবাই আশা করে, ডিএমপির এ উদ্যোগ সফল হবে এবং সড়ক-মহাসড়ক থেকে নিরাপত্তাহীনতা দূর হবে। এখানে একটি কথা না বললেই নয়—ডিএমপি গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বেশিরভাগই নেতিবাচক নয়। তবে এ কঠিন সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আরো বেশি সংস্কারের প্রয়োজন। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর প্রশ্নে।

আমরা মনে করি, ঢাকাবাসীকে আইন মানতে বলা হলে ঢাকাবাসী তা মানবে। বাধ্য করতে হবে না। তবে ঢাকাবাসীর কিছু সাধারণ সুবিধাকে একইসঙ্গে উন্মুক্ত করতে হবে। প্রথমেই বলতে হয়, দখলকৃত ফুটপাতকে মানুষ চলাচলের উপযোগী করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের ব্যর্থতার কথা না বললেই নয়। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথাও বলতে হয়। এই দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই ফুটপাত দখলকারীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এটা এখন ঢাকা শহরে বিনিয়োগ ছাড়া খুব বড় মাপের একটি বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি তদন্তের দাবি রাখে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ফুটপাতকে পরিষ্কার করে চলাচলের উপযোগী করার ব্যবস্থা নেওয়া আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের এই দাবিকে ডিএমপির কার্যক্রমের সঙ্গে একীভূত করার পরামর্শ রইল।

এখানে একটা প্রবচনের কথা উল্লেখ না করলেই নয়—‘পেটে দিলে পিঠে সয়’। কথাটি ধ্রুবতারার মতো সত্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও একই কথা বলেছেন, তবে একটু পরিশীলিত মেজাজে। তিনি বলেছেন, ‘শাসন করা তারেই সাজে সোহাগ করে যে গো।’ আমরাও এ প্রবচনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চাই—আমরা পুলিশকে রক্ষক হিসেবে পেতে চাই, ভক্ষক হিসেবে নয়।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সম্পাদকীয়,লেগুনা,নিরাপদ সড়ক,পুলিশ,ভোগান্তি,ডিএমপি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close