পটুয়াখালীতে পরকিয়ার জেরে প্রেমিক আবু জাফর মোল্লাকে (৬৫) হত্যার অভিযোগে প্রেমিকা রুনা বেগম (৪০) ও তার স্বামী ফয়জর মোল্লা ওরফে হুমায়ুন কবিরকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরের দিকে জেলার সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে গ্রেপ্তার দম্পতিকে আদালতে সোপার্দ করা হলে তারা বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে পটুয়াখালী সদর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে চলতি বছরের ১২ মার্চ কেশবপুর গ্রামে একটি মাঠে আবু জাফর মোল্লার মরদেহ পাওয়া যায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয় তার মৃত্যু হয়েছে প্রাথমিকভাবে ধারণা করে আত্মীয়-স্বজন। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একে হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করে পুলিশ। পরে আবু জাফর মোল্লার ছেলে কবির মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পটুয়াখালী থানার একটি মামলা করেন।

ওসি মো. জসিম বলেন, জাফর মোল্লার ছেলে করা মামলা আমলে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে বুধবার ভোরের দিকে ফয়জর মোল্লা ও স্ত্রী রুনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

জবানবন্দীর বরাত দিয়ে ওসি মো. জমিস জানান, জাফর মোল্লার সঙ্গে রুনা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া ছিল। সেই সম্পর্কের জেরে রুনার পারিবারিক জীবনে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় রুনার স্বামী ফয়জর মোল্লা বার বার নিষেধ করলেও অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যান জাফর মোল্লা।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে ওসি বলেন, ঘটনার দিন ১২ মার্চ সন্ধ্যায় জাফর মোল্লার ফোনে কল করে বাড়ির পেছনে ডাকেন রুনা বেগম। সেখান থেকে তাকে মাঠের মধ্যে নিয়ে যান রুনা। এ সময় তার স্বামী ফয়জর মোল্লা হাতে দা নিয়ে তাদের পিছু পিছু মাঠে যান। মাঠের মধ্যে ফয়জরকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জাফর মোল্লা। পালানোর চেষ্টা কালে তার গলা চেপে ধরে মাটিতে শুইয়ে দায়ের উল্টা দিক দিয়ে গলায় আঘাত করেন ফয়জর মোল্লা। এ সময়ে জাফর মোল্লার দুই হাত চেপে ধরে রাখেন রুনা। জাফর মোল্লার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে চলে যান ফয়জর ও রুনা দম্পতি।

পিডিএস/আরডি