আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার
কুলাউড়ায় বিয়ের ৮ মাসেই বধূকে হত্যা, স্বামী ও জা গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিয়ের আট মাসের মাথায় এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় গৃহবধূর স্বামী কামরুল ইসলাম ও তার ভাবি আছমা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গৃহবধূ সেবিনা আক্তার রুলীর (১৯) স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে মোবাইল ফোনে তার বাবার বাড়িতে খবর দেওয়া স্বামীর পরিবার। কিন্তু রুলীর শরীতে আঘাতের চিহ্ন দেখে বাবার বাড়ির লোকজন বিষয়টি পুলিশকে জানায়। শুক্রবার (১ মার্চ) পুলিশ লাশ উদ্বার করে ময়নাতদন্ত (পোস্টমর্টেম) করে। পরে থানায় হত্যা মামলা করে রুলীর পরিবার।
হত্যার শিকার সেবিনা আক্তার রুলী জেলার কুলাউড়া উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের মেয়ে। ৮ মাস আগে কুলাউড়া পৌর এলাকার কামরুল ইসলামের (২৭) সঙ্গে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়।
রুলীর বাবার বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেন, বিয়ের সময় স্বামীর চাওয়া উপহারের সব দাবী জিনিসপত্র পরিশোধ করা হয়। বিশেষ করে ২ লাখ টাকা দিয়ে আসবাব, ৫০ হাজার টাকার ফ্রিজসহ বিয়ের অনুষ্ঠান বাবদ ৬-৭ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামীর বাড়ির লোকজন রুলীর ওপর অত্যাচার শুরু করে। এ সময় নতুন করে যৌতুকও চাওয়া হয়। ভাইবোন স্বামীর বাড়িতে রুলীকে দেখতে এলে তাদেরও ভয়ভীতি দেখানো হতো, যাতে তারা আর না আসে।
এর মধ্যে রুলীর স্বামী কামরুল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এতে রুলী বাধা দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। এক মাস আগে স্বামীর বাড়িতে সালিশ বৈঠক হয়। এতে জনপ্রতিনিধি, সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে দুপক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দেন।
নিহত রুলীর মা ফাতেমা বেগম জানান, ‘তিনি ৪ সন্তানকে অনেক কষ্ট করে ভরন পোষণ করেছেন। রুলীর বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি প্রবাসে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে রুলীকে এসএসসি পাশ করিয়েছেন এবং রুলীকে বিয়ে বাবৎ ৬-৭ লাখ টাকা খরচ করেছেন। রুলীর সুখের আশায় ঋণ করে এ টাকা খরচ করেছেন। এখন স্বামী, তার ভাবিসহ বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।’
কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) কৈশন্য জানান, গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগে কুলাউড়া থানায় মামলা হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী ও তার ভাবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিডিএস/আরডি