বগুড়া প্রতিনিধি

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪

বগুড়া

প্লাস্টিকের সুতায় ব্যাগ, বাড়ছে কর্মসংস্থান   

বগুড়ার সোতলায় প্লাস্টিকের সুতায় ব্যাগ তৈরিতে ব্যস্ত নারী কারিগর। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বগুড়ায় প্লাস্টিকের বোতলের কর্ক গলিয়ে সুতা থেকে ব্যাগ তৈরি করে স্বনির্ভর হয়েছেন হাজারো নারী-পুরুষ। সুতা ও ব্যাগ তৈরির জন্য বগুড়া ও সোনাতলায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ছোট-বড় কারখানা। এতে এক দিকে যেমন দূষণ কমছে, অন্য দিকে সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের। হাজারো নারী-পুরুষ এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে চালাচ্ছেন সংসার। পাশাপাশি সোনাতলার তৈরি এসব ব্যাগ জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের নানা স্থানে। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পের আরো প্রসার হবে বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা।

জানা যায়, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতলের কর্ক থেকে বগুড়ার কারখানায় তৈরি হচ্ছে সুতা। সেই সুতা দিয়ে ব্যাগ তৈরি হচ্ছে জেলার সোনাতলার বালুয়াহাট কারিগর পাড়ায়। নানা স্থান থেকে সংগ্রহ করা প্লাস্টিকের বোতল থেকে জেলা শহরের চারমাথা, মাটিডালী এলাকায় ভাঙারি কারখানায় কর্ক আলাদা করা হচ্ছে। কর্কগুলো পরিস্কার করে তা গলিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রঙের সুতা। এসব সুতা চলে যাচ্ছে সোনাতলা উপজেলার বালুয়াহাট কারিগর পাড়ায়। পরে প্রক্রিয়াজাত করে এলাকার ছোট-বড় ১ ডজনের বেশি কারখানায় প্লাস্টিকের এই সুতা থেকে ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। এতে গড়ে মাসে ৩ লক্ষাধিক ব্যাগ তৈরি করেন এখানকার কারিগররা।

৪ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন নাজমা, এরপর থেকে বাড়িতেই প্লাস্টিকের সুতা প্রক্রিয়াজাত করে কারখানায় পাঠান তিনি। বেশ ভালো উপার্জন হয়। এই উপার্জনেই চলছে তার সংসার। আরেক নারী কারিগর সুফিয়া জানান, সংসারের কাজের ফাঁকে তিনি সুতার কাজ করেন। এতে তার বাড়তি আয় হচ্ছে।

বালুয়াহাট সাবেক ইউপি সদস্য সাজু মিয়া জানান, বাপ দাদার আমল থেকেই মুজা সোয়েটার গামছা তৈরি করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কারিগর পাড়ায় এসেছে পরিবর্তন। প্রায় ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে এই এলাকায় প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২ শতাধিক পরিবার। সুতা প্রক্রিয়াজাত ও প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করে নারী-পুরুষরা যেমন স্বনির্ভর তেমনি বাড়তি আয় করে সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা জানান, ১ কেজি সুতা থেকে ৯ থেকে ১০টি ব্যাগ তৈরি হয়। আকারভেদে এসব ব্যাগ ২০ থেকে ৪০ টাকায় পাইকারী বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। সীমিত লাভে এসব ব্যাগ বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারী বিক্রি হয়। তবে আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সেক্ষেত্রে সরকারী সহযোগিতা পেলে এ ব্যবসার প্রসার ঘটবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বিসিক বগুড়া ডিজিএম এ কে এম মাহফুজুর রহমান বলেন, যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিক বোতলের কর্ক গলিয়ে সুতা থেকে ব্যাগ তৈরির জন্য গড়ে উঠেছে কারখানা। এ শিল্পের বিস্তার ঘটলে এক দিকে যেমন পরিবেশ দূষণরোধ হবে, অন্য দিকে আরো হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি হবে। উদ্যোক্তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে নীতিমালা অনুযায়ী সবধরণের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান বিসিক কর্মকর্তা।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বগুড়া,সোনাতলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close