ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

  ০২ জানুয়ারি, ২০২৪

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট

সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ঘোড়াঘাট ডাকবাংলো

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় ঘোড়াঘাট ডাকবাংলো।ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

ব্রিটিশ আমলে চুন-শুরকীর গাঁথুনি ও ছাঁদ ঢালাই করে নির্মাণ করা হয় ঘোড়াঘাট ডাক বাংলো। বর্তমানে এটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থা হয়েছে। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা সদরে থেকে থানার উত্তর পাশে গেলেই মিলবে এই ডাকবাংলোটি। এটি সংস্কার করাসহ পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করবেন বলে জানান ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডাকবাংলোটি বর্তমানে অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত থাকায় প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। বৃষ্টির দিনে ছাঁদ ও টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। এছাড়া দরজা জানালা নড়বড়ে অবস্থা আবার কোনো ঘরের দরজা-জানালা নেই। এতে নষ্ট হচ্ছে অনেক আসবাবপত্র। ভবনের ইট খুলে পড়ছে ও ছাদের উপরিভাগে জন্মেছে বিভিন্ন আগাছা। চুরি হয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তাবেষ্টনীর প্রাচীরের ইটগুলো। অন্যের দখলে চলে যাচ্ছে বাংলোর অনেক জায়গা। সন্ধ্যা নামলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মাদকসেবীরা আড্ডা জমায় ওইখানে।


  • ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প
  • হিসেবে ব্যবহার করা হতো এই ডাকবাংলো।
  • ডাকবাংলোটি সংস্কার করা সহ পুনরায় চালু আশ্বাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।

এদিকে স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠরা বলেন, উপজেলার অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে শতবর্ষী প্রাচীন এই স্থাপনাটি অন্যতম। ব্রিটিশ শাসনের পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা হতো এটি। এখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে হাত বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে ব্লেড দ্বারা শরীর কেটে চামড়া ছিলে লবণ লাগা সহ গুলিকরে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। দেশ স্বাধীনের পর ডাকবাংলোটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে কিছুদিন চললেও গত প্রায় ২০ বছর ধরে এটি বন্ধ রয়েছে। এ উপজেলায় রাত্রি যাপন করার মত কোন ভালো মানের হোটেল বা রেস্ট হাউজ না থাকায় অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী-এমপি, দেশ-বরেণ্য সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ অনেক জ্ঞাণী-গুণী ব্যক্তিবর্গের আগমনে এটি ব্যবহার করা হত। সবমিলিয়ে অরক্ষিত অবস্থার মাঝেও কোনো রকমে টিকে আছে এই ডাক বাংলো।

উপজেলাবাসীর দাবি, এটি একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। কর্তৃপক্ষ নজর দিলে জরাজীর্ণতা কাটিয়ে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা যাবে ঐতিহাসিক এই ডাক বাংলোটি। এটি সংস্কার করলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। একইসাথে টিকে থাকবে শতবর্ষী ঐহিত্য।

জানতে চাইলে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ডাকবাংলোটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলে এটি সংস্কার করা সহ পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
দিনাজপুর,ঘোড়াঘাট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close