চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ৩০ নভেম্বর, ২০২২

স্বামীর মৃত্যুর পর বিয়ে, নারীকে সমাজচ্যুত করে ঘরে তালা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

স্বামী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামে হামিদা আক্তার নামে এক নারীকে সমাজচ্যুত করে তার ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে গ্রামের মাতব্বররা। ওই নারীর বসতঘরে ৭ মাস ধরে তালা ঝুলছে। বুধবার ( ৩০ নভেম্বর) সকালে নির্যাতিত মহিলা হামিদা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, তার প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর এলাকার কিছু খারাপ লোক তাকে কুপ্রস্তাব দিত। তাই তিনি বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার কারণে খাসপাড়া গ্রামের গ্রাম্য মাতব্বর ঈমান আলী, ফালান মিয়া, জালাল মিয়া ও সিরাজ মিয়াসহ ১৫/২০ জন মাতব্বর মিলে তার বসত ঘরে তালা দেন। ৭ মাস ধরে তালাবদ্ধ ঘরের লাখ টাকার আসবাবপত্র ঝরাজীর্ণ অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, তার ২ শিশু বাচ্চা রুটি খাইতে বসছিল। কিন্তু গ্রাম্য মাতব্বররা ওই শিশুদের রুটি খাওয়ার সময়ও দেয়নি। সবাইকে ঘর থেকে বের করে তালা দিয়ে দেয়। ৭ মাস ধরে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে আমু চা বাগানের পুলপাড়ে একটি চায়ের স্টল দিয়ে জীবন যাপন করছেন।

এ ব্যাপারে হামিদার আপন বোন জ্যোৎস্না আক্তার বলেন, গ্রামের মাতব্বররা ডাকলে, হামিদা যাননি। তাই ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী তার ঘরে তালা মারা হয়েছে। প্রতিবেশি সফিক মিয়া বলেন, মুরুব্বী ঈমান আলী ঘরে তালা দিয়েছেন। সেই তালা তিনি ছাড়া কেউ খোলার সাহস রাখেন না। স্থানীয় আহম্মদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ বলেন, ঘটনাটি তিনি জানেন না। তবে যারা অতি উৎসাহী হয়ে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন তা আইন বিরোধী। অন্যায় করলে বিচার আছে। তাই বলে ঘরে তালা মেরে অসহায় নারী ও বাচ্চাদের বের করে দেওয়া কোন ভাবেই ঠিক হয়নি।

অভিযুক্ত গ্রামের মুরুব্বী ঈমান আলীসহ কয়েকজন হামিদার ঘরে তালা বন্ধ করার কথা স্বীকার করে বলেন, তারা গ্রামবাসী একত্র হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজ করেছেন।

এমএইচ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সমাজচ্যুত,চুনারুঘাট,হবিগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close