আনোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)

  ১৩ আগস্ট, ২০২২

পাটের ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নানা প্রতিকুলতাকে পাশ কাটিয়ে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। টানা কয়েক বছর ধরে পাটের ভাল দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এতে অন্য কৃষকরাও পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে পাটের ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষি। ভাল দাম পেলে এবছরো লাভবান হবেন তারা। চলতি বছর ৩৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। অনেক কৃষক জানান, যখন খেত থেকে পাট ঘরে উঠে তখন বাজারে নিয়ে গেলে ন্যায্য মূল্যে পাওয়া যায়না। ঘরের পাট ফুরিয়ে গেলে বাজারে দাম বেড়ে যায়। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হন। যা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রাত দিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের লাভের গুড় পিঁপড়ায় খায়। এতে পাটের বাজার মূল্যে নির্ধারণের দারি জানান তারা।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে ভরে যাওয়া খাল, বিল, পুকর, নদী-নালায় পাট জাগ, আঁশ ছড়ানো ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। কিষাণীরাও সোনালি আঁশ ও রুপালি পাট কাটি শুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সোনালি আঁশ আর রুপালি পাটকাটির ছড়াছড়িতে গ্রামীণ মেঠোপথ, বাড়ির আনাচে কানাচে বর্নীল হয়ে উঠেছে। এমন দৃশ্য জানান দিচ্ছে আবার বুঝি ফিরে এসেছে হারানো সোনালি আঁশের হৃত গৌরব।

নিতাই ইউপির নিতাই ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের পাটচাষি আব্দুল মালেক জানান, ১ বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, নিড়ানি, সার, কীটনাশক, পচানো, পাট ছড়ানো ও রোদে শুকিয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ফলন হয় ৮ থেকে ১০ মন। বর্তমান বাজারে প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। শ্রমিকসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে। কিন্ত উৎপাদন খরচ অনুযায়ী মন প্রতি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম পেলে কৃষক লাভবান হবেন। তবে পাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও অসাধু সিন্ডিকেটের তৎপরতা কমাতে সরকারি নজর দারিসহ পাটের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।

পুটিমারী ইউপির মন্থনা হাজিপাড়া গ্রামের পাটচাষি ময়নুল জানান, গত কয়েক বছর থেকে পাটের ন্যায্য দাম পাওয়ায় উপজেলায় পাটের আবাদ বেড়েছে। কৃষকও লাভবান হয়েছেন। সরকারি নির্দেশনায় পাটজাত বস্তা ও ব্যাগ প্রয়োজনীয় পণ্য সংরক্ষণে ব্যবহার করায় বাজারে পাটের চাহিদা বেড়েছে। তবে মধ্যস্বত্বভোগী আর অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে কৃষক যাতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না হন সে বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, পাট চাষ সম্প্রসারণে লক্ষে কৃষকের মাঝে সার, উচ্চ ফলনশীল বারি-১ জাতের বীজ, প্রদর্শণী সরবরাহসহ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাট রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকার পাটের নানামূখী ব্যাবহারের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে পাটের চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রাথমিক ভাবে দাম কিছুটা কম হলেও মৌসুম শুরু হলে পাটের দাম বাড়বে। বরাবরের মত এবারো কৃষক লাভবান হবেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাট,নীলফামারী,দাম,শঙ্কা,কৃষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close