ছায়েদ আহমেদ, হাতিয়া (নোয়াখালী)

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

ছবি : সংগৃহীত

নিজ মর্জিমাফিক বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসাসহ বিভিন্ন অনিয়মের পাহাড় পরিমাণ অভিযোগ উঠেছে রিঙ্কু মজুমদার নামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ৮-৯ বছর ভারতে থাকা, যাওয়া-আসা, স্কুল চলার সময়ে নিজ মর্জিমাফিক আসা না আসা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি সুকৌশলে তুলে নেওয়া, স্কুল সভাপতিকে নিজের পক্ষে রেখে সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দ তছরুপ করাসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

এই প্রধান শিক্ষক নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা চরঈশ্বর রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্বরত। হাতিয়া উপজেলার নলচিরা (সাবেক চরকিং) ইউনিয়নে অবস্থিত চরঈশ্বর রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদারের অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য ঐ বিদ্যালয়টিতে দেখা গেল সম্পূর্ণ এক ভিন্ন চিত্র। কয়েকবছর ধরে প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদারের বিরুদ্ধে উঠে আসছে বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ। সে অভিযোগের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদক মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে স্কুলে যান। কিন্তু তিনি প্রধান শিক্ষক ও তিনজন সহকারী শিক্ষককে পাননি। রূপ কুমার নামের সহকারী শিক্ষকই কেবল পতাকা উত্তোলন সহ কচিকাঁচা শিশু শিক্ষার্থীদের সামলাচ্ছেন। স্কুলের স্থানীয় সাবেক শিক্ষার্থী, অভিভাবক মহলসহ প্রতিষ্ঠাতা বাড়ির লোকজন প্রধান শিক্ষক রিঙ্কু মজুমদারের ব্যাপারে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় সাবেক শিক্ষার্থী মনোয়ারা, আফসানা অভিভাবকদের মধ্যে মিলি রাণী, সুধাংশু, জগন্নাথ, পরিক্ষিত, ইব্রাহীম ওরফে মাস্টারসহ অনেকে তার অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েকজন জানান, এখানে ছেলেপেলেদের না পড়িয়ে স্কুলে কাজ করাতো, এ কারণে এখানকার অধিকাংশরাই লেখাপড়া করেনি। তারা জানান, প্রধান শিক্ষক কয়েকবছর ধরে নানা অজুহাতে তাদের থেকে টিপসই নিতেন, কারণ জিজ্ঞেস করলে বলতেন টাকা দেবে। কেউ বলেন, আগে যারা তার বিরুদ্ধে বলেছে, তাদেরকে স্কুলের টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে দেন না, স্কুলের মাঠে আসতে দেন না।

রিঙ্কু মজুমদার উপজেলার উত্তর চরঈশ্বর (দাসপাড়া) এলাকার সাবেক সহকারী শিক্ষক বারন্ড দাসের স্ত্রী। তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে স্থায়ীভাবে ভারতে বাস করেন বলে জানা যায়। কাগজে কলমে ৫জন শিক্ষকের দ্বারা পরিচালিত এই স্কুলটিতে বর্তমানে শ'খানেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।

স্কুলের অফিস রেকর্ডে দেখা গেছে, রিঙ্কু মজুমদার গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ১ মাসের মেডিক্যাল ছুটি নিয়ে এ বছরের ৩০ মে পর্যন্ত কাটান। করোনার আগেও কর্মস্থলে না থেকেও ছিলেন মর্মে মাসিক রিপোর্টও জমা দিয়েছিলেন তিনি। ভারতে থাকা, সেখানে যাওয়া-আসার এই চিত্র প্রায় ৯ বছর ধরেই।

সর্বোপরি বিষয়ে এই ক্লাস্টারের দায়িত্বরত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, রিঙ্কু মজুমদারের বিরুদ্ধে আগেও পত্রিকায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে অথচ এখনো তিনি পরিবর্তন হননি। তার ব্যাপারে আমরা রিপোর্ট দিয়েছি, এখন দেখি বিভাগীয় মামলা হয় কিনা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম এ ব্যাপারে দায়সারা কথা বলেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনসুরুল্যাহ শিবলি বলেন, আমি খতিয়ে দেখে জানাব।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া,একটি বিদ্যালয়ের,প্রধান শিক্ষক
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close