কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

  ২৪ জুলাই, ২০২২

গুলিতে আ’লীগ নেতা ও স্কুল শিক্ষক হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় ছুরিকাঘাতে কাপড় ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল (৫০) ও স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহনকে (৫৫) হত্যার দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত. ইদ্রিস আলীর ছেলে মো. তারিক প্রামানিক (৪২), মোশারফ হোসেনের ছেলে কামাল রেজা নিপু (৫২), আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মাসুদ (৪২) ও নবীর আলীর ছেলে রায়হান আলী (৪৭)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ আগস্ট রাত সোয়া ৯ টায় ভেড়ামারা রেল বাজার মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটে উপজেলার আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও কাপড় ব্যবসায়ী মো. মেহেরুল ইসলাম তার নিজ দোকানের আঙ্গিনায় স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহনসহ আরও ৬/৭জন বসে গল্প করছিলেন। এসময় হঠাৎ তিনটি মোটর সাইকেলযোগে ৮/৯ জনের সেখানে এসে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং ১০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এঘটনায় গোটা শহরজুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এবং লোকজন ছুটাছুটি করতে থাকে। সংবাদ পেয়ে ভেড়ামারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত গুলিবিদ্ধ রক্তাক্তদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্র্থামিক চিকিৎসা চলাকালে স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৬ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল (৫০)এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত উন্নত চিকিসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নৃসংশ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বা আহত কারো পরিবার বা আত্মীয় স্বজন থানায় মামলা করতে অনিচ্ছা পোষণ করায় ১৭ আগস্ট, ২০০৯ তারিখে ভেড়ামারা থানার উপ পরিদর্শক শেখ আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন। মামলাটি ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক আজম খান তদন্ত শেষে ২০১১ সালে ২১ জুলাই ১৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যার দায়ে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

কুষ্টিয়া আদালতের সরকারি কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, ভেড়ামার থানার চাঞ্চল্যকর গুলিবর্ষণসহ হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ৫ জনের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে অভিযুক্ত সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত. চাদ আলীর ছেলে সিদ্দিকুল ওফরে বাংলাভাই ইতোপূর্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হন।

মামলা পরিচালনাকারী আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুধীর কুমার শর্মা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
যাবজ্জীবন,স্কুল শিক্ষক হত্যা,গুলি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close