মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২০ জুন, ২০২২

পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন, চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সরিষাবন ও ছাতক এলাকায় ফের দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ভয়াবহ এই নদী ভাঙনের মধ্যে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

প্রতিদিন কয়েক লাখ ফুট বালু উত্তোলন করায় সরিষাবন ও ছাতক এলাকায় নদী ভাঙনের তীব্রতা আর বৃদ্ধি পেলেও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে বরাবরই নিরব রয়েছেন।

নদী পাড়ের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, বালু দস্যুদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুললে নানা হুমকি ও হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সরিষাবন রাজারচর এলাকার বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা ভাঙনকবলিত অঞ্চল থেকে দ্রুত ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র স্রোতপ্রবাহে একে একে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট। নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ ভর্তি বালুর বস্তা ফেলা হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না ভয়াবহ ভাঙন। উপজেলার সরিষাবন, ছাতক, কান্দাপাড়া, পৃর্বহাসাইল ও তার আশ পাশের বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাঙন এলাকাই চলছে আবার বালু উত্তোলন।

পদ্মা নদীর ছাতক এলাকায় খনন যন্ত্র বসিয়ে মাটি কাটছে জমজম নামের একটি বালু খনন প্রতিষ্ঠান। জমজমের দায়িত্বে থাকা সোহেল সৈয়াল জানায়, খনন যন্ত্র দুটি দিঘিরপাড়া গ্রামের মিজান খানের । কাটার যন্ত্র দিয়ে ঠিকমতো বালু উঠছে না। সারাদিনে মাত্র দুই বালহেড মাটি বিক্রি করছেন। নদীর পাশে মাটি নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে আরো ৭/৮টি বালহেড। এক একটি বালহেডে ১০/১২ জাহার ফুট বালু বহন করা হয়। এভাবে দিন রাত বালহেডে তুলে প্রতিদিন লাখ লাখ ফুট বালু পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে নিচ্ছে বালুদস্যুরা।

স্থানীয়রা জানায়, মিজান খান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদার, শাশীম মোল্লা, কামাল মোল্লা, লোটাস কামালসহ আরো কয়েকজন বালুদস্যু পদ্মা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। অবৈধভাবে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিবছরই আমাদের বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয় জানতে কামাড়খাড়া ইউনয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে মিজান খান বালু উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, খনন যন্ত্র দুইটি তার না। বালু ব্যবসা অন্য কারো।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা তানজিম অন্তরা জানায়, বিষয়টি জানতে পেরে আমরা সরেজমিনে গিয়েছিলাম। তবে বালু উত্তোলনকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পদ্মা,ভাঙন,অবৈধ,বালু,উত্তোলন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close