চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

চকরিয়ায় অবাধে পাচার হচ্ছে বনের গাছ ও বালু

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কক্সবাজারের উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের খুটাখালী বনবিটের জায়গা থেকে অবাধে পাচার হচ্ছে বনের ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ ও অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু। বনভূমির উচুঁ-নিচু পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরীর অভিযোগ উঠেছে এ বনখেকোদের বিরূদ্ধে। সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ তা দেখেও নীরব ভুমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, খুটাখালী বনবিটের নিয়ন্ত্রনাধীন বনবিভাগের ২০১৯ সালের ১০ হেক্টর বাগান থেকে ১৯৮০ সালের মধুরশিয়ার শেষমাথা পর্যন্ত কতিপয় ভূমিদস্যু বনভূমির জায়গায় উচুঁ-নিচু পাহাড়ের মাটি কেটে রাস্তা তৈরি করেছে স্থানীয় ওবাইদুল্লাহ গ্যাংয়ের লোকজন। ওই ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ফরেস্ট অফিসপাড়ার মৃত মোকতার আহমদের ছেলে ওবাইদুল্লাহ'র নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বনবিভাগের জায়গায় চলছে নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও পাহাড় নিধনের মহাযজ্ঞ।

বনের জায়গায় রাস্তা তৈরি করে ওই পথ ধরে বনের ভেতরে হরিন্নাঝিরি থেকে শ্যালো মেশিন বসিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ বালু উত্তোলন। বিগত ২০১৯ সালের বাগানের জায়গায় গড়ে তুলেছে বালির স্থুপ। ওবাইদুলের ভাই আমির সুলতান পুলিশের কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে প্রতিনিয়তই হয়রানি করে আসছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। তাছাড়া সুলতানের চত্রছায়ায় এলাকার চিহ্নিত ডাকাত, অস্ত্রধারী, চোর, মাদক কারবারী, সাজাপ্রাপ্ত ও পালাতক আসামিরা থানা পুলিশের কাছে অধরা রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

পালাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভয় দেখিয়ে বাগানিয়া পাড়ার মুখে খুটাখালীছড়া সংলগ্ন প্রায় তিন একরের মতো ধানী জমি থেকে উপরে মাটি সরিয়ে দিব্যি অবৈধভাবে বালি উত্তোলন এবং বনের সংরক্ষিত গাছ কেটে ওবায়দুল্লাহ তার বাহিনীর মাধ্যমে পাচার করে আসছে বলে দাবী করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, খুটাখালী বনবিটের হরিন্নাঝিরি ও বাগানিয়া পাড়ায় বনবিটের ২/১ জন বনকর্মী এবং মুন্সির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন ওবায়দুল্লাহ। এলাকার সাধারণ মানুষ তার বাহিনীর ভয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট বনকর্তৃপক্ষ। ওবায়দুল্লাহ বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ অভিযোগ করলে তাকে ওই এলাকা থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে চলে যেতে হয়, না হয় তাদের নির্যাতনে বসবাস করাও দায় হয়ে পড়ে। বনকর্মীরাও তার বাহিনীর ভয়ে উৎকোচ নিয়ে নীরবতা পালন করে যাচ্ছে।

জানা গেছে, ওবায়দুল্লাহ বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে ডাকাতি, অপহরণ, চুরি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বন মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। যার মধ্যে জিআর ৩৪০/১৫, ৩৩৯/১৫, ৩৩৫/১৫)।

এছাড়াও তার ভাই হামিদ উল্লাহ (হামিদ) বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধের একাধিক মামলা যার জিআর ৩৪০/১৫, ৩৩৯/১৫, ১২/১২। বর্তমানে সেও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। ওবায়দুল্লাহ বাহিনীর লিডার রেজাউল সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের রয়েছে ডজনাধিক মামলা। মামলা নং-জিআর-১২১/১৪, ৩৪৪/১৪, ৩৪০/১৫, ৩৩৯/১৪, ১৮/১৪, ২০৬/১৪, ২০৫/১৪।

তার অপর ভাই নজির আহমদ বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত বনের ভেতরে ওবাইদুল্লাহ তার ভাইসহ ১০/১২ চিহ্নিত আসামিরা অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুটাখালী বনবিট কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল প্রতিনিদিনের সংবাদকে জানান, বনের জায়গায় যে রাস্তাটা করেছিল তা আমরা অবগত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেই। এছাড়াও কোন ধরণের যানবাহন যেন ডুকতে না পারে তার জন্য বড় বড় গর্ত করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চকরিয়া,কক্সবাজার,বনের গাছ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close