সিরাজুল ইসলাম আপন, ভাঙ্গুড়া (পাবনা)

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

‘গোলাঘর’ এখন কেবলই স্মৃতি

গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ- এটি গ্রাম বাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদ। বর্তমান সময়ে পুকুর ভরা মাছ থাকলেও নেই কেবল গোলাভরা ধান। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কৃষকদের ধান রাখার সেই ‘গোলাঘর’।

আগের দিনে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ক্ষেতের ধান গোলাঘরে মজুদ রাখতেন। বসত বাড়ির আঙ্গিনায় মাটি, বাঁশ আর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হতো ধান রাখার এ ঘর। ধানের গোলা বসানো হতো বেশ উঁচুতে। যেন তাতে বর্ষার পানি প্রবেশ না করে। গোলায় প্রবেশের জন্য রাখা হতো একটি দরজা। দরজায় বাইরে থেকে তালা মেরে রাখা হতো চোরের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য। এটি দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতো।

জানা গেছে, একটি গোলাঘর তৈরি করতে খরচ হতো ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে কৃষাণিরা গোলাঘর লেপে (মাটির আস্তর) প্রস্তুত করে রাখতো। আগের দিনে গোলাঘর দেখে অনুমান করা যেতো এলাকায় কে কত বড় জোতদার। গোলা ঘরের বদলে মানুষ এখন চট ও প্লাস্টিকের বস্তায় ধান ভরে ঘরে মজুদ রাখছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সাথে, যাদের বাপ-দাদারা গোলাঘরে ধান রাখতেন।

তারা জানান, আগের দিনে ধান রাখার জন্য গোলাঘর ব্যবহার করা হতো। গোলাঘরে ধান রাখায় ইঁদুর ও পোকামাকড়ের উৎপাত থেকে ফসল রক্ষা পেতো। একটি বড় গোলা ঘরে সাধারণত ২-৩শ’ মণ পর্যন্ত ধান রাখা যেতো। উপজেলার কয়েকটি বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এখনো দেখা মেলে গোলাঘরের। তবে এতে এখন আর ধান রাখা হয় না। গ্রাম-বাংলার এ ঐতিহ্যটুকু শুধুই স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন তারা।

পিডিএসও/এসএমএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভাঙ্গুড়া,পাবনা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close