কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১১ জুন, ২০২১

ডিএনএ পরীক্ষায় মেলেনি ধর্ষণের আলামত, শিশুর বাবা কে?

প্রতীকী ছবি

ধর্ষণ মামলায় ৯ মাস জেল খেটে ছাড়া পেয়েছেন মোস্তফা শিকদার (৪০) নামে এক যুবক। ধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ধর্ষণের কারণে ওই তরুণীর ৩ মাস আগে কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন।

কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে মোস্তফা শিকদার ধর্ষণ করেননি। তাহলে ওই তরুণীর কন্যা সন্তানের পিতা কে? এমন প্রশ্ন এখন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের কয়েক হাজার নর-নারীর মুখে মুখে।

জানা গেছে, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর কোটালীপাড়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়। বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল তারাশী গ্রামের মৃত আজগর আলী শিকদারের ছেলে মোস্তফা শিকদার তার বোনকে ধর্ষণ করে। এই ফলে বাদীর বোন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বাদীর বোন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি কোটালীপাড়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই দিন দিবাগত রাতেই কোটালীপাড়া থানা পুলিশ মোস্তফা শিকদারকে গ্রেপ্তার করে ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে তোলেন। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস জেল খেটে চলতি বছরের ২৪ মে মোস্তফা শিকদার জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি বাদীর বোন ওই তরুণী এক কন্যা সন্তানের মা হন। এরপর মোস্তফা শিকদারের পরিবারের পক্ষ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য গোপালগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে আবেদন করেন। ফলে আদালত ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা মোতাবেক কোটালীপাড়া থানা পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশ ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করান।

ডিএনএ এক্সপার্ট দিপঙ্কর দত্তের দেওয়া রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত যে, মোস্তফা শিকদার ওই তরুণীর গর্ভজাত সন্তানের জৈবিক পিতা নয়। এই ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তারাশী গ্রামের সবার মুখে মুখে একই প্রশ্ন তাহলে এই কন্যা সন্তানের পিতা কে?

এ বিষয়ে ওই তরুণীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মামলার বাদী বলেন, আমরা এই ডিএনএ পরীক্ষার রির্পোট মানি না। পুনরায় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করবো।

মোস্তফা শিকদার বলেন, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ৯ মাস জেল খাটানো হয়েছে। বর্তমানে আমি এই মামলায় জামিনে আছি। একজন শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে দৈনিক আয় করে আমাকে সংসার চালাতে হয়। দীর্ঘ এই ৯ মাস জেলে থাকার কারণে আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। আমাকে যে হয়রানি করা হয়েছে তার জন্য আমি বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।

কোটালীপাড়া থানার ওসি মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার রির্পোট পাওয়ার পরে মোস্তফা শিকদারকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে মামলার ফাইনাল রির্পোট আদালতে দিয়েছি। আদালত যদি এই মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন তাহলে আমরা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা করবো যে, এই কন্যা সন্তানের পিতা কে।

পিডিএসও/ইউসুফ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কোটালিপাড়া,ধর্ষণ,শিশুর জন্ম,ডিএনএ পরীক্ষা,আসামির জামিন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close