শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ১৫ এপ্রিল, ২০২০

করোনায় চলছে শাবির অনলাইন ক্লাস, বিড়ম্বনায় শিক্ষার্থীরা

করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। দীর্ঘ বন্ধে সেশনজটের আশংকায় অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নানা সমস্যা আর বিড়ম্বনায় আলোর মুখ দেখছে না এ কার্যক্রম। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে এতে সাড়া দিচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে দেশের এই দুর্যোগকালীন সময়ে নানাবিধ সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এভাবে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়ে উঠছেন শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

জানা যায়, করোনার কারণে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। এতে সাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের ক্লাস নিতে নির্দেশ প্রদান করেন। শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কবল থেকে রক্ষা করতে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় বিভিন্ন মহল। গত ৩১ মার্চ থেকে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ক্লাস শুরু করেন শিক্ষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাবি, জাবি, রাবি, চবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১-২টি বিভাগে ক্লাস শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শাবিতে প্রথম কয়েকদিন ২৮টি বিভাগের মধ্যে ৮-১০টি বিভাগ ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে তা ক্লাসের অনেকাংশেই কমে এসেছে। এছাড়া কয়েকজন শিক্ষক অনিয়মিতভাবে ক্লাস নিচ্ছেন। এসব ক্লাসে উপস্থিতির হারও ৩০-৪০ শতাংশের বেশি নয় বলে জানা যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনলাইনে ক্লাস চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কেননা শিক্ষার্থীদের ৮০ শতাংশের উপরে যাদের বাড়ি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। সেখানে অনেকের নেই স্মার্টফোন, রয়েছে ইন্টারনেট বিড়ম্বনা, রিচার্জের সুবিধা না থাকাসহ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না। এমনকি একই ধরনের সমস্যার কারণে শিক্ষকরাও ক্লাসে অংশ নিতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন বলে জানা যায়।

এছাড়া দেশের এই দুর্যোগকালীন সময়ে ক্লাসকে প্রাধান্য দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক—এমন প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।

অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমের বিষয়টি সমন্বয় করছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মুমিন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরহাদ রাব্বী।

এ বিষয়ে আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, আমরা শুধু টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখি৷ অনলাইন ক্লাসে কি কি অ্যাপস ব্যবহার করা যায় সেই বিষয়গুলো আমরা শিক্ষকদের জানাচ্ছি এবং ব্যবহার করতে ঝামেলা হলে তা দেখছি। এ পর্যন্ত ১৫-২০ জন আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন।

এখন পর্যন্ত কতজন শিক্ষক অনলাইন ক্লাসে অংশ অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন—এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন বলেন, এরকম সঠিক তথ্য নেই, নেওয়ার সুযোগও নেই। ক্লাস নেওয়ার জন্য সব শিক্ষককে অনুরোধ করছি। আমার জানা মতে, বেশিরভাগ শিক্ষকই ক্লাসে অংশ নিতে পেরেছেন।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা সেরা। ভালো কাজের সমালোচনা হবে স্বাভাবিক। আমাদেরকে সামনে আগাতে হবে। পেছনে ফিরে থাকালে চলবে না।

ইন্টারনেট বিড়ম্বনায় ক্লাস করতে সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ক্লাস করতে না পারলে পরে রিভিউ ক্লাস করতে পারবে। ড্রপবক্স থেকে রেকর্ডিং ডাউনলোড করার সুযোগ আছে। সারাদিন বন্ধুদের সাথে কথা বলতে পারছে, ফেসবুক ব্যবহার করছে। কিন্তু ক্লাস করতে পারবে না। তাদের সংখ্যা খুবই কম। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা তো অবশ্যই দেখবো।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিড়ম্বনা,করোনা,শাবি,অনলাইন ক্লাস
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close