‘গার্মেন্টসের রপ্তানি আয় ২৮,১৪৯ মিলিয়ন ডলার’
গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি করে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২৮ হাজার ১৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আজ রোববার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সদস্য মুহাঃ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পোশাক শিল্প অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা ৮২ ভাগ আসে এই খাত থেকে। সরকার ভবিষ্যতে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
তোফায়েল বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে সরকার নতুন বাজার অনুসন্ধানের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এই কর্ম-পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্রাজিল, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি এবং রাশিয়াসহ উন্নত দেশে তৈরি পোশাকের বাজার সৃষ্টির জন্য বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমিক ও কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, পণ্যের কাঁচামালের স্বল্পমূল্যে আমদানি, রপ্তানি বাজার সংক্রান্ত তথ্যাদি ও প্রযুক্তি সম্পর্কে উদ্যোক্তাদের তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, একক দেশীয় বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন ও বিভিন্ন দেশে আয়োজিত মেলায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ক্ষেত্র বিশেষে নগদ সহায়তা, ডিউটি ড্র ব্যাক ও বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উপযুক্ত অবকাঠামোগত ও ইউটিলিটি সুবিধাসহ একাধিক উপযুক্ত স্থানে বিশেষায়িত অঞ্চল/ ‘পোশাক পল্লী’ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প স্থাপনে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশের সকল তৈরি পোশাক কারখানার জন্য বিভিন্ন দেশের এবং বিভিন্ন ধরনের ক্রেতাদের চাহিদা সমন্বয় করে ন্যুনতমভাবে পালনযোগ্য একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড ইউনিফাইড কোড অব কমúøায়েন্স’ প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজসহ সকল রপ্তানি পণ্য উন্নয়ন ও ভবিষ্যত প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম নেয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি দলের সদস্য এম. আবদুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, চা রপ্তানি করে বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ৩৬ কোটি ৩ লাখ ২ হাজার ৭৬৭ টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। জাতীয় পার্টির সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের অপর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮২ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে হচ্ছে। তৈরি পোশাক রপ্তানির এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।
সরকার তৈরি পোশাকের নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ ও সুসংহত করতে ব্রাজিল, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি, রাশিয়াসহ অন্য অগ্রসরমান দেশে সরকারিভাবে বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণ ও সুসংহতকরণের জন্য বিদেশে বিপণন মিশন পাঠানো, একক দেশীয় বস্ত্র ও তৈরি পোশাক মেলার আয়োজন, আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন ও অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ছাড়া আঞ্চলিক বাজার আরো গভীরভাবে পর্যালোচনার সুবিধার্থে বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে বাণিজ্যিক উইং স্থাপন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যমান জেনেভার বাণিজ্যিক উইং সম্পসারণ, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে নতুন বাণিজ্যিক উইং স্থাপন, তৈরি পোশাক ও গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজসহ সব রপ্তানি পণ্য উন্নয়ন, ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের উপর জোর দিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।পিডিএসও/মুস্তাফিজ