reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

কারাগারের কয়েদিদের তৈরি পণ্যে মুগ্ধ ক্রেতা-দর্শনার্থীরা

দেশের ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা জমে ওঠেছে। বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা। তবে দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা একটু কম থাকলেও সন্ধ্যার পর দর্শনার্থীদের ঢল নামে। বরাবরের মতো এবারও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কারাবন্দিদের হাতে তৈরি দৃষ্টিনন্দন পণ্য সামগ্রী।

প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের ৬৮টি কারাগারের বন্দিদের তৈরি কারাপণ্য শুরুতেই সাড়া ফেলেছে। দৃষ্টিনন্দন কুটিরশিল্প, তাঁতের শাড়ি, কাঠ, বাঁশ ও বেতের পণ্যে মুগ্ধ ক্রেতা দর্শনার্থীদের পদচারণা বেশি এ প্যাভিলিয়ানকে ঘিরেই।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে মেলাপ্রাঙ্গণ গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই ডান পাশে দৃষ্টিনন্দন ‘কারাপণ্য প্যাভিলিয়ন’। কারাগারে বন্দি কয়েদিদের হাতে তৈরি হয়েছে বিপুল পণ্যের সমাহার।

সুতা, বাঁশ, কাঠ, প্লাস্টিক, পাট, বেত, পুঁতি দিয়ে তৈরি প্রায় দুই শতাধিক পণ্যে সাজানো হয়েছে পূর্বাচলে অনুষ্ঠিত কারাপণ্যের এ প্যাভিলিয়ন।

এরমধ্যে রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদিদের তৈরি জামদানি শাড়ি। যশোর জেলা কারাগারে কয়েদিদের তৈরি নকশি কাঁথা, বাঁশের ডালা, নারিকেলের শলার ফলের ঝুড়ি, বেতের তৈরি মোড়া, বেকারি পণ্য। নাটোর জেলা কারাগারের বন্দিদের তৈরি নকশি কাঁথা, বেতের মোড়া; দিনাজপুর জেলা কারাগারের শতরঞ্চি। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও কুমিল্লা জেলা কারাগারের কাঠের চেয়ার, শো-পিস। কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের লুঙ্গি, গামছা ও চাদরের কাটতিই বেশি।

কারাপণ্যের এ প্যাভিলিয়ানে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২১ হাজার টাকা মূল্যের পণ্য রয়েছে।

এছাড়াও বন্দিদের তৈরি চটের ব্যাগ, নারিকেলের কয়ার পাপোশ, চুড়িদানি, বেতের দোলনা, চুড়ি, ওয়ারড্রোব, ফোল্ডিং চেয়ার, পুঁতির কলমদানি ও ব্যাগের চাহিদাও ব্যাপক। হাতে তৈরি এসব পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন সাধারণ ক্রেতারা।

কারাপণ্য প্যাভিলিয়নের বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই খুব ভালো সাড়া মিলছে। কখনোই প্যাভিলিয়ন ফাঁকা থাকছে না। বেচা-কেনাও বেশ ভালো।

এ বছর বাঁশ, বেত ও পুঁতির তৈরি পণ্যেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি মোড়া, বাঁশের ডালা-চালনি, ফুল ও ফলের ঝুড়ি, বাঁশের তৈরি ফুড কভার, নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়ি ও পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ব্যাগও ভালো বিক্রি হচ্ছে।

মূলত সংশোধন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উৎপাদিত এসব কারাপণ্যের লাভের অর্ধেক অর্থাৎ শতকরা ৫০ শতাংশ কারাবন্দিদেরই দেওয়া হয় বলে জানান প্যাভিলিয়নে কর্মরত বাংলাদেশ জেলের হিসাবরক্ষক মাসুদ মিয়া।

তিনি বলেন, কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের সংশোধন ও দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কারাগারগুলোতে কুটির ও হস্তশিল্পের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রিন্টিং, চামড়াজাত দ্রব্য তৈরি, নারীদের জন্য বিউটিফিকেশন, রেডিমেড পোশাক জামদানি তৈরির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।

কারাগারে এসব প্রশিক্ষণ শেষে সারা বছর বন্দিদের হাতে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন পণ্য। এসব পণ্যই বাণিজ্য মেলায় বিক্রির জন্য আনা হয়। কারাপণ্য প্যাভিলিয়ানে ৪৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী শিফটিং ডিউটি করে যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে এ প্যাভিলিয়ানের বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাণিজ্য মেলা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close