ইসমাইল হোসাইন খান, মনোহরদী (নরসিংদী)
শিশুকে ভুল চিকিৎসা দেওয়ায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়
নরসিংদীর মনোহরদীতে চিকিৎসার ভুলে তিন বছরের এক শিশুর শারীরিক অবস্থা অবনতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা মনোহরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্ত চিকিৎসক ইবরাহীম এইচ সরকারের পক্ষে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শিশু ইসরাত জাহান উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের দাইরাদী গ্রামের ইমরান হোসেন- ফাতেমা বেগম দম্পতির সন্তান। অভিযুক্ত ডাক্তার ইবরাহীম সরকার উপজেলা সদরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক।
অভিযোগে ফাতেমা বেগম জানান, তার তিন বছর বয়সী শিশু সন্তান ইসরাত জাহান চুলকানি রুগে ভুগছিল। চলতি বছরের ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে আনা হয়। সেখানকার চিকিৎসক ইবরাহীম এইচ সরকার শিশুটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তাকে চুলকানির চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাপত্রে বিভিন্ন ওষুধসহ ট্রিয়েলন ইনজেকশন (১ এমএম) লিখে দেন চিকিৎসক। নিয়মিত ওষুধ সেবন ও ইনজেকশন পুশ করার ১৫ দিন পর থেকে শিশুটির শরীরের পেছনের অংশে মাংস কমতে থাকে। কিছুদিন পর মাংস হাড়ের সঙ্গে মিশে যায়।
এদিকে গত ৯ অক্টোবর শিশুটিকে কিশোরগঞ্জের জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহ আলম সরকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, ট্রিয়েলন ইনজেকশন পুশ করার কারণে শিশুর শারীরিক অবস্থা এমন হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে।
গত সোমবার সকালে ডা. ইবরাহিম এইচ সরকারকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানানো হলে তিনি শিশুর মাকে গালাগাল ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। বিষয়টি স্থানীয়দের জানানো হলে শুক্রবার এক সালিসি বেঠকের মাধ্যমে মেয়ের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেন ডাক্তার ইবরাহীম।
জানতে চাইলে চিকিৎসক ইবরাহিম এইচ সরকার বলেন, ‘আমার চিকিৎসাপত্রে কোনো ভুল হয়নি। অদক্ষ লোক দিয়ে ইনজেকশন পুশ করার কারণে এমন হয়েছে।’ টাকা দেওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ‘টাকা আমি দেইনি, তবে আমার শ্বশুর দিয়েছে শুনেছি বলে শুনেছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন বলেন, ‘থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
"