শিশির মাহমুদ, রাবি
উপাচার্যবিহীন রুয়েটে প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) উপাচার্য নেই এক মাস। এখন পর্যন্ত নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এখনো শূন্য আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি শীর্ষ ও প্রধান পদ। এ কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আর্থিক অনুমোদন ও নানা ধরনের আবেদনপত্রে স্বাক্ষরসহ প্রশাসনিক কাজগুলোও আটকে আছে। এদিকে প্রায় চার বছর ধরেই উপ-উপাচার্য পদটিও শূন্য রয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৮ মে বিশ^বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহা. রফিকুল আলম বেগকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। গত এক মাস আগে তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। এছাড়াও ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ও আচার্য ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মর্ত্তুজা আলীকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০১৪ সালের ১১ অক্টোবর প্রো-ভিসির মেয়াদকাল শেষ হয়। তার মেয়াদকাল শেষ হলেও এখন নিয়োগ হয়নি নতুন উপ-উপাচার্য। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত নানা প্রশাসনিক জটিলতা ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে।
রুয়েট রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, উপাচার্য না থাকায় এরই মধ্যে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের নানা প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিভিন্ন কাজে আর্থিক অনুমোদন এবং নানা ধরনের আবেদনপত্রে স্বাক্ষরসহ প্রশাসনিক কাজগুলো ভিসি ছাড়া কেউ করতে পারেন না। তাই এক ধরনের স্থবিরতার মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজের জন্য উপাচার্যের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু উপাচার্য না থাকায় কোনো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক কাজ আংশিক করার পর অনুমোদনের জন্য আটকে আছে।
এদিকে শীর্ষ এই দুইটি পদে কখন নিয়োগ দেওয়া হবে তাও রয়েছে অন্ধকারে। রুয়েট প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কাজে ব্যাঘাতসহ অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ভূমিকা পালন করেন উপাচার্য। এই পদে যদি কেউ না থাকে তাহলে নানা ধরনের সমস্যা হয়। বিশেষ করে বর্তমানে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নৈরাজ্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। যার ফলে যেকোনো সময় সংঘর্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রুয়েটের কয়েকজন শিক্ষক। তাই ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগেই তারা যোগ্য কাউকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, উপাচার্য পদে দলীয় পরিচয়কে বিবেচনা না করে সৎ, নীতিবান, মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিকেই যেন নিয়োগ দেয়া হয়। যিনি রুয়েটের প্রশাসনিক, একাডেমিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার মান উন্নয়নসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবেন।
"