কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

  ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যশোরের কেশবপুর

পৌর শহরে কিশোর গ্যাং রাজনীতিকদের ছত্রছায়া

যশোরের কেশবপুর পৌর শহরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং বাহিনী। মাদকে জড়িয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মারামারি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রেমের বিরোধসহ বিভিন্ন অপরাধে কিশোর ও তরুণরা জড়িয়ে পড়েছে। এমনই অভিযোগ এলাকার জনপ্রতিধিদের। ইতোমধ্যে কিশোর গ্যাং বাহিনীদের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে জানান কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আলম।

সরেজমিনে জানা গেছে, কেশবপুর শহর কেন্দ্রীক এলাকাসহ ১১টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে কিশোর গ্যাং ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। উঠতি বয়সী যুবক, কিশোর গ্যাং বাহিনী জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সঙ্গে। এর মধ্যে পৌরসভার মধ্যকুল, ভোগতি, বায়সা, ব্রম্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা, বাজিতপুর, সাবদিয়া, হাবাপোল, রামচন্দ্রপুর, আলতাপোল এলাকাসহ ত্রিমোহিনী, সাগরদাঁড়ি, মজিদপুর, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোট, কেশবপুর সদর, পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, সাতবাড়িয়া ও হাসানপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত স্থানীয় কিশোর গ্যাং বাহিনী মাদক সেবন এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, সম্প্রতি শহরের প্রাণকেন্দ্র ত্রিমোহিনী মোড়ের একটি মার্কেট থেকে প্রচুর পরিমান ফেনসিডিলের বোতল জব্দ করা হয়। সেখানে কিশোর গ্যাং বাহিনী ওঠাবসা করে থাকে।

কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দিন আলা জানান, প্রতিনিয়ত পৌর এলাকাসহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিশোর গ্যাং বাহিনী মাদকে জড়িয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এরা প্রভাবশালী রাজনীতিকদের ছত্রছায়ায় থাকে। প্রশাসন কঠোর না হলে কেশবপুরবাসীর ব্যাপক ক্ষতি হবে।

মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বিশ্বাস জানান, মঙ্গলকোট বাজার, মাগুরখালী বাজারের পাশে, কর্ন্দপপুর, হদ, পাথরা, পাচারই এলাকার বিভিন্ন মাছের ঘেরের টং ঘরে, বসুন্তিয়া সরকারী প্রাথমিকের মাঠে ও রামকৃষ্ণপুরে কিশোর গ্যাং বাহিনীসহ মাদক বিক্রেতা এবং সেবনকারীদের আনাগোনা দেখা যায়। এরা বড়ভাইদের লোক বলে পরিচয় দিয়ে থাকে।

উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর পলাশ বলেন, এলাকার রাজনীতিক ব্যক্তিরা প্রভাব বিস্তারের কারণে কিশোর গ্যাং বাহিনী তৈরি করছে। যার কারণে এ বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তিনি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

কেশবপুর পৌর মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম মোড়ল বলেন, দিনদিন কেশবপুরে কিশোর গ্যাং বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় মারামারি, চাঁদাবাজি, জমি ও মাছের ঘের দখল, চুরি, ছিনতাই বেড়ে গেছে। তিনি প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার দাবি জানান।

কেশবপুর থানার ওসি জহিরুল আলম বলেন, কিশোর গ্যাং বাহিনীদের তালিকা তৈরি হয়েছে। ওই গ্যাংয়ের কয়েকজনকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের গডফাদারদের সনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close