ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৬ মে, ২০২৪

ব্যর্থতায় দায়বদ্ধতার বাইরে কি কোচ!

একের পর এক সিরিজ শেষে বাংলাদেশের হারের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। উন্নতির কিছুই হচ্ছে না। খেলা শেষে কিছু দিন ব্যাটারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে আমরা তা বেমালুম ভুলে যাচ্ছি। কিন্তু ব্যাটারের ব্যর্থতার আড়ালে ঢেকে যাচ্ছে মাস্টার মাইন্ড তৈরি করা কোচদের ভূমিকা। তাদের দায়িত্ব জ্ঞান নিয়ে এখন ভক্তদের মাঝে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে তাদেরকে রেখে আমাদের কোনো লাভই হচ্ছে না। যেটা হচ্ছে সেটা হলো- যারা প্রতিভাবান তাদের ক্যারিয়ার কিভাবে ধ্বংস করা যায়, সেই কাজটা তারা ঠিক ভালোভাবেই করে যাচ্ছেন। অথচ অযোগ্যদের দলে জায়গা দিতে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা। এবাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার, তা অনুমেয়।

দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ম্যাচ বাদ দিলে সর্বশেষ তিন সিরিজের প্রায় সবকটিতে বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও সেখানে টপঅর্ডারদের অবদান ছিল না বললেই চলে। বেশির ভাগ ম্যাচে জয় এসেছে বোলার আর শেষ দিকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের কল্যাণে। লিটন দাস, সৌম্য সরকারদের অধারাবাহিক পারফরম্যান্স ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সফরেও।

স্বাগতিকদের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি লিটন-সৌম্যরা। লম্বা সময় ধরে ছন্দহীনতায় ভুগতে থাকা লিটন দাস বাদ পড়েছেন দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশ থেকে। এদিকে অধিনায়ক হওয়ায় এক প্রকার ‘বাধ্য’ হয়েই খেলাতে হচ্ছে ছন্দে না থাকা শান্তকে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা কেন রান পাচ্ছেন না- এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল সাকিব আল হাসানের কাছে।

বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক জানিয়েছেন, ব্যাটারদের কোথায় সমস্যা তিনি জানেন না। এমনকি সাকিব এও বলেছেন সমস্যাটা কোথায়, সেটা আমি জানলে দলকে বলতাম। ইমরুল কায়েস মনে করেন, ব্যাটারদের সমস্যাটা সাকিব জানলেও মাঠে পারফর্ম করতে হবে তাদেরই। সাকিব মোটিভেশন কিংবা টিপস দিলেও চাইলেই মেডিসিনের মতো করে সমাধান খাইয়ে দিতে পারবেন না।

বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে ইমরুল বলেন, ‘দেখুন, খেলোয়াড়দের তরফ থেকে যেটা বলা হচ্ছে সাকিবের প্রেস কনফারেন্সটা আমি দেখেছি। ওকে যে প্রশ্নগুলো করা হয়েছে ও বলেছে আমি জানি না, ‘আমি জানলে সমাধান দিতে পারতাম। সত্যি বলতে এটাই। ব্যাটাররা যখন রান না করবে দিনশেষে সে নিজেও একজন ব্যাটার, সে নিজেও চেষ্টা করছে রান করার। আরেকটা ব্যাটারকে তো আপনি রান করিয়ে দেবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত ও পারফর্ম না করবে। সাকিব হয়ত তার ব্যাটিং-বোলিং দুই জায়গা থেকে চেষ্টা করছে ভালো করার কিন্তু একটাতে হচ্ছে আরেকটাতে হয়ত হচ্ছে না।’ ‘আমার মনে হয় যারা ওপেনিং বা মিডল অর্ডার ব্যাটার তারা যদি রান না করতে পারে এটা তো এমন না যে আপনি তাকে মেডিসিনের মতো খাইয়ে দেবেন। সাকিব এটা দিতে পারবে না। সে হয়ত কিছু টিপস দিতে পারে, মোটিভেশনাল কথা বলতে পারে কিন্তু মাঠে যে খেলবে তাকেই পারফর্ম করতে হবে। সবমিলিয়ে আমার মনে হয় সাকিব যেটা বলেছে সেটা হয়ত হারের পর সে উত্তেজিত ছিল, কথাগুলো ঠিকভাবে নিতে পারেনি, তাই হয়ত ওইভাবে রিয়েক্ট করেছে।’

সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ব্যাটাররা কেন নিয়মিত বড় রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেই সময় গণমাধ্যমের প্রতিনিধির কাছেই উল্টো সমাধান জানতে চেয়েছিলেন যা কিনা ব্যাটারদের বলবেন। ইমরুল মনে করেন, ব্যাটারদের সমস্যাগুলো কোচদেরই বের করা উচিত এবং তাদের ফর্মে ফেরানো উচিত।

এ প্রসঙ্গে ইমরুল বলেন, ‘অবশ্যই এটা কোচদের খুঁজে (সমস্যা) বের করা উচিত কেন খেলোয়াড়রা ভালো খেলতে পারছে না। দিন শেষে আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কিন্তু কোচদের পেছনে অনেক টাকা বিনিয়োগ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ব্যাটারদের সমস্যাগুলো দেখছি। আমি নিজেও দেখেছি সমস্যা এগুলোই। কিন্তু এ ব্যাপারগুলো যদি কোচরা না বুঝে তাহলে কিন্তু কঠিন। তাই কোচদেরই বের করতে হবে এ ব্যাটারের কি সমস্যা আর কেন তারা রান করছে না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close