ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৫ মে, ২০২৪

অজুহাত বাকি আছে শান্তদের!

মানুষের স্বাভাবিকভাবে হাত থাকে দুটি-এটা আমাদের সবার জানা। কিন্তু এ ছাড়া আরেকটি হাত আছে সেটা হলো শান্তদের খেলার পর তাদের ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করা; যার নাম অজুহাত। যেটা কেবল হারের পর ব্যর্থতা ঢাকার একমাত্র বুলি। এ ব্যর্থতার বুলি চলবে আর কতকাল? শান্তদের খেলায় ক্রিকেটভক্তরা চরমভাবে হতাশ এবং বিরক্ত সেটা তারা কি অনুধাবন করতে পারে না। নাকি তারা চোখ থেকেও অন্ধ। তাদের এ খামখেয়ালিপনায় টাইগারদের ক্রিকেট জ্ঞান এখন প্রশ্নবিদ্ধ!

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য কতখানি প্রস্তুতি নেওয়া যাবে তা নিয়ে ছিল সংশয়। কিন্তু বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের এতটাই বেহাল দশা যে, সেদিকে আলোকপাত করার কোনো অবস্থা নেই। আইসিসি র‌্যাংকিংয়ের ১৯ নম্বরে থাকা দলের কাছে সিরিজ হেরে ইতিবাচক ঢঙে বাংলাদেশ অধিনায়ক শেষ ম্যাচে ভালো করার প্রত্যাশা রেখেছেন। এদিকে লড়াইটা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের মধ্যে। দুই দলই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শততম হারের দ্বারপ্রান্তে ছিল। তাতে ক্যারিবীয়দের টপকে অনাকাক্সিক্ষত রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।

গড় বৃহস্পতিবার টেক্সাসের হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে আরেকটি দুঃসহ অভিজ্ঞতা হয় বাংলাদেশের। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬ রানে হেরেছে তারা। টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে আমেরিকানরা। জবাবে শান্তর নেতৃত্বাধীন দল ৩ বল বাকি থাকতে অলআউট হয় ১৩৮ রানে। একই ভেন্যুতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ৪ ওভারে হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ২৬ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু নাটকীয় পালাবদলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দলের ব্যাটিং লাইনআপ। ১৯ রানের মধ্যে বাকি ৫ উইকেট শিকার করে তাদেরকে গুঁড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতে নিয়ে ইতিহাস গড়ে শক্তির বিচারে অনেক পিছিয়ে থাকা আমেরিকানরা। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে এটাই তাদের প্রথম সিরিজ জয়ের কীর্তি।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের ভালো করতে না পারা নিয়ে চর্চা চলছে বহু বছর ধরে। তবে ম্যাচের পর দক্ষতায় কোনো ঘাটতি না থাকার কথা জানান শান্ত, বলেন, ‘আমার মনে হয়, স্কিলে কোনো সমস্যা নেই। মানসিকতা ও মনোবৃত্তি বদলাতে হবে আমাদের। গত দুই ম্যাচে আমরা তা করতে পারি ও ভালো খেলতে পারিনি।’ এক পর্যায়ে বাংলাদেশের রান ছিল ২ উইকেটে ৭৮। এরপর বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে পথ হারিয়ে ফেলে। হারের জন্য বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দায় দেন, যা আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। মাঝের ওভারগুলোয় আমরা প্রায় প্রতি ওভারেই উইকেট হারিয়েছি। ম্যাচ হারার মূল কারণ এটিই।’

বিস্ময়কর শোনালেও হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কা এখন টাইগারদের সামনে। শান্ত তবুও আছেন ভালো কিছু প্রাপ্তির আশায়, ‘সত্যি বলতে, আমরা ভালো খেলতে পারিনি। তবে আমার মনে হয়, খুব ভালো সুযোগ আছে, একটি ম্যাচ বাকি আমাদের। খুব ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে। আশা করি, পরের ম্যাচে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব।’ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ থেকে যদিও ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করা ভীষণ কঠিন বাংলাদেশের জন্য। এবারের হতশ্রী ব্যাটিংয়ের আগে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ ৪ ওভারে ৫৫ রান রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বোলাররা। তাদের ওপর চড়াও হয়ে ৩ বল হাতে রেখেই ১৫৩ রান তাড়া করে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে হিউস্টনে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শততম হারের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচ হারের আগেও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের তালিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের (৯৯) চেয়ে পিছিয়ে ছিল। টানা দুই হারে তারা এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও টপকে গেল।

২০ ওভারের ক্রিকেটে ১৬৮টি ম্যাচ খেলে ১০০টিতে হারা বাংলাদেশের ৪টি ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত। বাকি ৬৪ ম্যাচে এসেছে জয়। তালিকায় দুয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৩টি ম্যাচ খেলে ৯৯টিতে হেরেছে। ৯৮ হার নিয়ে তিনে শ্রীলঙ্কা ও ৩৫ হার নিয়ে চারে আছে জিম্বাবুয়ে। ৯০ ম্যাচ হেরে পাঁচে আছে নিউজিল্যান্ড।

মোট ম্যাচের ৫৯.৫২ শতাংশই হেরেছে বাংলাদেশ। কমপক্ষে ১০০ ম্যাচ খেলা দলগুলোর মধ্যে যেটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবার ওপরে জিম্বাবুয়ে, নিজেদের মোট ম্যাচের ৬৫.৫১ শতাংশ ম্যাচই হেরেছে তারা।

২.১২ শতাগশ হার নিয়ে তিনে আছে আয়ারল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার হারের হার ৫১.৮৫ শতাংশ। ৫১.২৯ শতাংশ হার উইন্ডিজের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close