ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ফাইনালের সমীকরণ থেকে ছিটকে গেছে ভুটান

আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এক ডজন গোল হজমের পর শুরুর একাদশে ছয় পরিবর্তন নিয়ে নামে ভুটান। তাতেও এড়ানো যায়নি হার। প্রতিবেশী দেশটির বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতে ফাইনালের আশা জিইয়ে রেখেছে নেপাল। আমিশা কারকি করেন হ্যাটট্রিক। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হারের পর রবিবারের জয়ে নেপালের দুই ম্যাচে পয়েন্ট ৩। একটি করে ম্যাচ খেলে জয় তোলা বাংলাদেশ এবং ভারতেরও পয়েন্ট ৩ করে। দুই ম্যাচ হারা ভুটান ফাইনালের সমীকরণ থেকে ছিটকে গেছে।

প্রথমে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ভুটান কোচ কারমা দেমা। বাংলাদেশের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ম্যাচ কতটা কঠিন হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর, ‘আমি ম্যাচটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’ আগের ম্যাচে আঘাত পাওয়ায় মাঠ ছেড়েছিলেন ভুটান অধিনায়ক এবং গোলরক্ষক নরবু জাংমো। রবিবার তিনি খেলতেই পারেননি। একাধিক ফুটবলারের চোটে পড়ার জন্য দেমা বাজে টার্ফকেই দুষলেন। আসলে এমন টার্ফে আমরা প্রথমবার খেলছি। অনেকেই ইনজুরিতে পড়ছে। শুধু পেশির চোট নয়, আমাদের অধিনায়কের হাড় ভেঙেছে। কয়েকজনের শরীরের নানা অংশে আঘাত আছে। টার্ফ অনেক বেশি শক্ত।’ আমাদের দেশেও টার্ফ আছে। আমরা ঘাসের মাঠ এবং টার্ফ দুটাতেই অনুশীলন করি। এখানকার টার্ফ একেবারেই আলাদা। ভুটানে চারটি ঘাসের মাঠ এবং একটি টার্ফের মাঠ আছে।’

এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে একই সুরে কথা বলেন, ‘নেপাল কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুংও। ভুটানের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতলেও দল সেরাটা দিতে পারেনি বললেন। আমাদের একজন প্রথম ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েছে। এই টার্ফ অনেক বেশি শক্ত। আমরা দেশে টার্ফে খেলেছি, তবে এটার সঙ্গে অনেক ফারাক আছে।’ লাল-সবুজের দলের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হারার পর সেলাই করা বল বাদ দিয়ে সেলাই ছাড়া বল দিয়ে খেলাকে হারের জন্য দায়ী করেছিলেন। আজও তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। তবে ভুল সংশোধন করে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে নামার কথাও বলেছেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে এ বিষয়ে বাফুফের নারী দলের উইং মাহফুজা আক্তার কিরণের কাছে প্রসঙ্গটি তোলা হয়। তিনি বললেন, ‘আপনাদের কাছ থেকেই আমি রিপোর্ট পেলাম। সভাপতির সঙ্গে কথা বলব। টার্ফের কাজ করা হবে।’

রবিবার দুপুরে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের আট মিনিটে ভুটান গোলরক্ষককে একা পেয়ে জালে বল জড়িয়েছিলেন আমিশা কারকি। তার আগেই অবশ্য বেজে ওঠে অফসাইডের বাঁশি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে অনেকটা দৌড়ে বক্সে ঢুকে শট নেন দীপা শাহি। পা দিয়ে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক সোনাম পেলডেন বল প্রতিহত করে কর্নারের বিনিময়ে ভুটানকে রক্ষা করেন। মিনিট-পাঁচেক পর আর অফসাউডে কাটা পড়েননি আমিশা। গোলরক্ষককে পরাস্ত করে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লক্ষ্য ভেদ করে নেপালকে এগিয়ে দেন।

ম্যাচের ২৮ মিনিটে আবারও দীপার শট পা দিয়ে ঠেকান সোনাম। কয়েক সেকেন্ড পর দীপা ফের আক্রমণে উঠে বক্সে ঢুকলে বাজে অফসাইডের বাঁশি। পরের মিনিটে দীপার শট দারুণ দক্ষতায় সোনাম ফিরিয়ে দেন। ফিরতি বলে তিনি আবারও শট নিলে প্রতিপক্ষের একজন কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন। সাত মিনিট পর আবার গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন দীপা। গোলরক্ষক পা দিয়ে বল ফেরান। খানিক পর সোনাম পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলে আমিশার সামনে ছিল প্লেসিং শটে সহজ গোলের সুযোগ। সময়মতো কিক নিতে না পারায় নিশানাভেদ হয়নি।

বারবার ভুটানের রক্ষণ অরক্ষিত হওয়া দেখা গেলেও ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হচ্ছিল নেপালের মেয়েরা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বল নিয়ে দৌড়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের ঝলকে জোড়া গোলের দেখা পান আমিশা। বিরতির পর ৬০ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও বল ওপর দিয়ে মেরে বসেন দীপা। কিছুক্ষণ পর দীপার বাড়ানো বলেই ডান পায়ের টোকায় গোল করেন নেপাল অধিনায়ক প্রীতি রাই। ৬২ মিনিটে গোলরক্ষকের এগিয়ে আসা দেখে অনায়াসে বল জালে জড়িয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন আমিশা। ম্যাচের বাকি সময়ে উল্লেখযোগ্য আক্রমণ গড়ে ওঠেনি। ব্যবধান বাড়াতে পারেনি নেপাল। ৭ ফেব্রুয়ারি হিমালয়ের দেশটির প্রতিপক্ষ ভারত, ম্যাচ শুরু বিকেল ৩টায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close