আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৮ নভেম্বর, ২০১৮

ইয়েমেন যুদ্ধে ভূমিকা

সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে আর্জেন্টিনা

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করা হবে কিনা তা নির্ধারণে তদন্ত শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস খবরটি জানিয়েছে। আর্জেন্টিনায় আয়োজিত জি টুয়েন্টি সম্মেলনকে সামনে রেখে এ তদন্ত শুরু হলো। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

২০১৪ সালে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর প্রতি অনুগত সেনা সদস্যদের সঙ্গে একজোট হয়ে সানাসহ দেশের বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সংঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে ইয়েমেন। ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী এ অভিযানে নিহত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযোগ্য রোগে মৃত্যু হয়েছে আরো ১০ হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ। ভয়াবহ বিমান হামলার তান্ডবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্ব স্থানীয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া সম্প্রতি সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকান্ড নিয়েও সমালোচনার মুখে রয়েছেন তিনি। এর মধ্যে এ সপ্তাহের শেষের দিকে আর্জেন্টিনায় আয়োজিত জি টুয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা বিন সালমানের। আর তার আগেই ইয়েমেন যুদ্ধে ভূমিকার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়।

সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, আর্জেন্টিনা সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও আর্জেন্টাইন ফেডারেল প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ভঙ্গের অভিযোগ দায়েরের পর এ সিদ্ধান্ত নেয় আর্জেন্টিনা।

এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ বলেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমানের জানা উচিত যে আর্জেন্টিনায় গেলে তাকে অপরাধজনিত তদন্তের মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে।’

সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে তখনই আর্জেন্টিনা তদন্ত শুরু করছে যখন কিনা তিনি জামাল খাশোগি হত্যাকান্ড নিয়ে সন্দেহের মুখে আছেন। ৫৯ বছর বয়সী খাশোগি একসময় সৌদি রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি যুবরাজের কঠোর সমালোচকে পরিণত হন। গ্রেফতার এড়াতে দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাচনে চলে যান খাশোগি। দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে হত্যার শিকার হন খাশোগি। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে খাশোগি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে সৌদি আরব জানায়, ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে খুন হন তিনি। এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ওঠে। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ সে অভিযোগ নাকচ করে আসছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান খাশোগি হত্যার ঘটনায় সরাসরি সৌদি যুবরাজকে দায়ী না করলেও তিনি দাবি করেছেন, সৌদি আরবের ‘শীর্ষ পর্যায়’ থেকে হত্যার নির্দেশ এসেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close