আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২১ আগস্ট, ২০১৮

পাকিস্তান সফরে যাবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইমরানের সঙ্গে বৈঠক

পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক করতে ইসলামাবাদ সফর করবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের সরকারি ও কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সেদেশের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত শনিবার শপথ নিয়েছেন ইমরান খান। নবনির্বাচিত এ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে ইসলামাবাদ সফরের পরিকল্পনা করেছেন মাইক পম্পেও। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদ সফর করার কথা তার। বৈঠকটি হলে, পম্পেওই হবেন নবনির্বাচিত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককারী প্রথম কোনো বিদেশি প্রতিনিধি।

সূত্রকে উদ্ধৃত করে ডন জানায়, পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় পম্পেও দুইটি বড় ইস্যুর ওপর প্রাধান্য দিতে পারেন। সেগুলো হলো, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে এক সময়কার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে পুনর্জাগরিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগান শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পাকিস্তানের সমর্থন আদায় করা। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ১২০০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক প্যাকেজ পাওয়ার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সমর্থন চাইতে পারে পাকিস্তান।

জানা গেছে, পররাষ্ট্র দফতরের ব্যুরো ফর সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স-এর প্রধান অ্যালিস ওয়েলসও পম্পেওর সফরসঙ্গী হতে পারেন। পম্পেও ও তার প্রতিনিধি দল পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারত ও আফগানিস্তানও সফর করতে পারে। নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মধ্যবর্তী কংগ্রেসনাল নির্বাচনের আগে আফগানিস্তানে একটি শান্তি চুক্তি চাইছে পাকিস্তান। এরই অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তান সফর করতে পারেন পম্পেও।

এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন কর্মকর্তারা আফগান যুদ্ধ বন্ধে সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানকে আহ্বান জানান। বলা হয়, আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পরও তালেবানের কিছু অংশের সঙ্গে শান্তি আলোচনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র নিরুৎসাহী হয়নি। ওয়েলস তখন পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, আফগানিস্তানে ১৭ বছরের যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ অবসানের এখনই সময়। এ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব স্থানীয় ভূমিকা পালনের জন্য ইসলামাবাদকে আহ্বান জানানো হয়। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস, শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্যে আফগান তালেবানকে রাজি করানোর যথেষ্ট ক্ষমতা পাকিস্তানের আছে।

সাম্প্রতিক বিবৃতিগুলোতেও দেখা গেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো সে সম্পর্ক পুনর্জাগরিত করার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর নবনির্বাচিত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এর আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে মার্কিন কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আর তাদের মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরেই ধারাবাহিক অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে নিরাপদ স্বর্গ গড়ে তুলতে দিয়েছে পাকিস্তান। আর সন্ত্রাসীরা তা ব্যবহার করে সীমান্ত অতিক্রম করে আফগানিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। পাকিস্তান বরাবর সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ অস্বীকার করে আসলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা কঠোর করেছেন। এর শেষ ফল হিসেবে এ বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ এনে পাকিস্তানে নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে তখন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ট্রাম্পের ঘোষণার পরও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সহায়তা স্থগিত সাময়িক। আর এটি আপাতত স্থগিত করা হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলবে যুক্তরাষ্ট্র।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close