নিয়মিত ঘুমের ওষুধে হৃদরোগের ঝুঁকি
অনেকের রাতে ঘুম হয় না। ফলে নির্ভর করেন ঘুমের ওষুধের ওপর। ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানাচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
ঘুম জীবন ধারণের জন্য আবশ্যকীয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আদর্শ হলো ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো। পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সিদের ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সিদের ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা এবং ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময় ঘুম না হলে অনেকেই ঘুমের ওষুধের ওপর নির্ভর করেন। তবে জেনে রাখা ভালো, নিয়মিত ঘুমের ওষুধ সেবনেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।
দীর্ঘ মেয়াদে যেসব ক্ষতি হয়
বছরখানেক আগে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান জার্নাল ‘বিএমজে’ ওপেন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস আমাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। রাতে ঘুম কম হলে উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যা দেখা দেয় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁঁকি বাড়ে।
অনেকে ঘুমের বড়ি খেয়ে সাময়িক উপশম পেলেও ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ বা প্রেসক্রিপশন ড্রাগ যাই হোক, ঘুমানোর পরও সতেজতা অনুভব করেন না। ঘুমের ওষুধ খান এমন ১০ জনে ছয়জনের ঝিমুনি থাকে। ভুলো মনেরও কারণ ঘুমের ওষুধ। বমি বমিভাবও দেখা দিতে পারে।
টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে আমেরিকান ‘জার্নাল অব জেরিয়া ট্রিক সাইকিয়াট্রি’তে বলা হয়েছে- দীর্ঘমেয়াদি ঘুমের ওষুধ সেবন করলে প্রোস্টেটের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে মূত্রবদ্ধতা। এ সমস্যার কারণে মূত্রথলি পুরোপুরি খালি করতে সমস্যা হয়।
ঘুমের ওষুধ এড়াতে করণীয়
* প্রতি রাতে একই সময় ঘুমাতে হবে আর সকালে একই সময় উঠতে হবে।
* খুব ক্লান্তি বোধ করলে অল্প সময়ের জন্য দিনে ঘুমানো যেতে পারে।
* ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন- চা বা কফি ঘুমানোর অনেক আগে খেতে হবে।
* বিছানা যাতে স্বস্তিকর হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
* ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক করতে হবে।
* মনকে বিক্ষিপ্ত করে এমন সব শব্দের উৎস বন্ধ করতে হবে। ঘরে আলো যত কম থাকবে তত ভালো, অন্ধকার ঘরই ঘুমের জন্য বেশি উপযোগী।
* শুধু ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাবেন। খাওয়া, বই বা পেপার পড়া বা টিভি দেখা বিছানায় শুয়ে করবেন না।
"