প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

পোলট্রি খামারির মাথায় হাত

তাপপ্রবাহে মুরগি মারা যাচ্ছে বিভিন্ন পোলট্রি খামারে। এছাড়া পানির স্তর নেমে যাওয়ার পাশাপাশি লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের কারণে বোরো জমিতে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার কৃষকরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর সৈয়দপুরে হিটস্ট্রোকে জামিল হোসেন (৬৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়। জামিল হোসেন শহরের নতুন বাবু পাড়ার তিল খাজা রোর্ডের মরহুম মন্জুর হোসের ছেলে।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে হিটস্ট্রোকে দুই কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের পাটাগ্রামের চরে কৃষক পেয়ার ব্যাপারি (৭৫) এবং একই দিনে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের কালুপাড়ায় মাঠে কাজ করার সময় কৃষক আফসার আলী (৬৫) হিটস্ট্রোকে মারা যান।

এদিকে, যমুনা চরাঞ্চলে ধান, পাট, মৌসুমি সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দিনমজুররা রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। অপরদিকে জেলার মুরগির খামারে প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা যাচ্ছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। সিরাজগঞ্জ জেলা পোল্ট্রি খামার সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় ৮ হাজার মুরগির খামার রয়েছে। তীব্র গরমে মুরগির মৃত্যু ও খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যেই প্রায় ৫০ ভাগ খামার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে সামশুল আলম (৬০) নামে এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১টায় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চুনতি হাদুর পাহাড় এলাকায় ক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। সামশুল আলম এলাকার মৃত ঠাণ্ডা মিয়ার পুত্র।

তালতলী (বরগুনা) : বরগুনার তালতলীতে পুকুর খননের সময় হিটস্ট্রোকে মো. নয়া মিয়া ফকির নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নয়া মিয়া ফকির একই গ্রামের আমির আলী ফকিরের ছেলে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়।

নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাপপ্রবাহে জীবন ওষ্ঠাগত। এরসঙ্গে চলছে লোডশেডিং এবং বিরতিহীন বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ, যেন মরার ওপর খরার ঘা। নাচোলের আম চাষিরা বলেছেন, তীব্র খরায় আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে, পানির লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় আর বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে সাধারণ পাম্প দিয়ে গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া যাচ্ছে না। ধান চাষিরা বলেছেন ভরা মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। ভোল্টেজ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহে আম, পিয়ারা, পেঁপে, লিচু, ড্রাগন, কমলা -মাল্টা ও আঁখ ক্ষেত পুড়ে যাচ্ছে। গরমে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন পোল্ট্রি খামারিরা। মারা যাচ্ছে অনেক মুরগি। কমে গেছে পোল্টিসহ সব মুরগির দাম। তারিফ পোল্ট্রি ফার্মের মালিক জানান, তীব্র গরমে লস করে বিক্রি করতে হচ্ছে মুরগি।

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার অনেক এলাকায় ভূগর্ভের পানির স্তর নীচে নেমে গেছে বলে অগভীর সেচ মেশিনে কম পানি উঠছে। ধান জমিতে সেচে বেশি সময় লাগছে। এ জন্য চাষিরা বোরো ফসল নিয়ে ভাবনায় দিন পার করছেন।

নাগরৌহা গ্রামের কৃষক আ. করিম, শফিউদ্দিন সরকার, জাফর মিয়া, আ. কাদের মিয়া জানান, তাদের অগভীর সেচ মেশিনে পানি কম মাত্রায় উঠছে। এতে স্ক্রিমের বোরো ধান জমিতে পানি সেচে বেশি সময় ও বেশি খরচ লাগছে। কৃষক আবু সাঈদ, আলম হোসেন, ছোটো বাখুয়ার জয়নাল মিয়া বলেন, বোরো ধানের জমিতে গাছের গোড়ায় পানি থাকতে হয়। তবেই ভালো ফলন মেলে। কিন্তু তাপ প্রবাহে সেচ দিয়ে কুলিয়ে উঠা যাচ্ছে না। পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে ফলন কম বা ধানে চিটা হতে পারে। উপজেলা কৃষি অফিসার সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, এসময় বোরো ধানে পুরোপুরি থোড় ও ফুল বের হচ্ছে। এমন সময় জমিতে পানি জমিয়ে রাখতে হবে।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন শহরমুখি হচ্ছেন না। হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে বাড়ছে ডায়েরিয়া ও কলেরা রোগীর সংখ্যা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close