প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পিন্ডি কমিশনার চাতা পুলিশ হেফাজতে

পাকিস্তানে ভোট কারচুপি তদন্তে কমিটি ইসিপির

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির বিষয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি দেওয়া রাওয়ালপিন্ডি কমিশনার লিয়াকত আলি চাতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার অফিসও সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে তার অভিযোগের বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। খবর ডনের।

রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের নির্বাচন কমিশনার চাতা গত শনিবার ভোট জালিয়াতি নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক সংবাদ সম্মেলনের পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কমিশনার চাতাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবে অভিযোগের পর তাকে ‘হেফাজতে’ নেওয়া হয়েছে। পুলিশের ওই মুখপাত্র বলেন, কমিশনার চাতার কার্যালয় সিল করা হয়েছে- যাতে অভিযোগ ইস্যুতে কোনো রেকর্ড বা আলামত নষ্ট না হয়।

জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রাওয়ালপিন্ডির ভোটগ্রহণ কর্মী, রিটার্নিং ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে এবং নির্বাচনসামগ্রী ও তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষিত করা হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার চাতা বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে রাওয়ালপিন্ডিতে অন্তত ১৩ প্রার্থী হেরেছেন, কিন্তু তাদের সবাইকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধান দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারচুপির সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতি পুরোপুরি জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। এ কর্মকর্তা নিজেরসহ জড়িত সবার বিচার চেয়েছেন।

জালিয়াতির দায় স্বীকার করে চাতা বলেন, এমন কাজ করার পর রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। আমি পিন্ডিতে ভোট জালিয়াতির দায় নিচ্ছি। কেননা আমার ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিল। লিয়াকত চাতা বলেন, একসময় আত্মহত্যার চিন্তা করেছি। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি জনগণের সামনে বিষয়টি তুলে ধরার। আমি এখন শান্তিপূর্ণভাবে মরতে চাই। আমি যা করেছি, সেজন্য শাস্তি হোক আমার। ভোট জালিয়াতির সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজা এবং প্রধান বিচারপতি কাজি ফায়েজ ইসা জড়িত বলেও দাবি করেন চাতা। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুলতান রাজাসহ ইসিপির জড়িত অন্য কর্মকর্তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলি চাতার এমন বিস্ফোরণ ভোট কারচুপির স্বীকারোক্তির ঘটনায় পাকিস্তানে তোলপাড় শুরু হয়। অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। শনিবার রাতেই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনী সংস্থাটি জানিয়েছে, উচ্চপর্যায়ের কমিটিতে সচিব, বিশেষ সচিব এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আইন)সহ নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন। ইসিপি জানায়, কমিটি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করবে এবং তিন দিনের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন দেবে।

প্রতিবেদনের ফল বিশ্লেষণ করে পিন্ডি কমিশনারের বিরুদ্ধে ইসিপি অবমাননাসহ কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইস্যুটি নিয়ে ইসিপি জরুরি সভা করেছে। শনিবার রাতের ওই বৈঠকে কমিশনের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত ছিলেন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজা এবং পাঞ্জাব ইসিপি সদস্য বাবর হাসান ভারওয়ানা অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close