প্র্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আনাদোলুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের গাজায় বেসামরিক মানুষের ওপর চালানো হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বাংলাদেশ সবসময় গণহত্যার বিপক্ষে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্র আর তাদের বাঁচার অধিকার রয়েছে। আমি মনে করি, এটি একটি গণহত্যা। ফলে আমরা কখনো একে সমর্থন দেব না। জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণের ফাঁকে গত শনিবার তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে সাক্ষাৎকার দেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, গাজার মানুষের বাঁচার অধিকার রয়েছে। তাদের ওপর চালানোর হত্যাযজ্ঞ খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ফলে আমাদের উচিত তাদের সাহায্য করা এবং তাদের ওপর আক্রমণ আর যুদ্ধ বন্ধ করা।

আনাদোলু লিখেছে, অবরুদ্ধ গাজায় বাংলাদেশ সাহায্য পাঠিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা নারী ও শিশুসহ ফিলিস্তিনের জনগণকে সমর্থন আর সাহায্য পাঠাতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর পরিকল্পিত অভিযান নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এমন আক্রমণকে বাংলাদেশ কখনো সমর্থন করবে না। ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকার থাকা উচিত, এর কোনো বিকল্প নেই। সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘ যে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের কথা বলেছে, সেই রেজুলেশন বাস্তবায়ন হওয়া উচিত বলেও মনে করেন শেখ হাসিনা।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার মানুষজনের জন্য বাংলাদেশ সহায়তা পাঠিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীকে ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিশু, নারী ও ফিলিস্তিনের জনগণকে’ সমর্থন ও সাহায্য করার আহ্বান জানান।

দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে পরিকল্পিত ইসরায়েলি অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কখনোই এ ধরনের আক্রমণকে সমর্থন করি না। ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকার থাকা উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর মিউনিখ ত্যাগ : এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখে তিন দিনের সরকারি সফর শেষে গতকাল রবিবার রাতে দেশের উদ্দেশে রওনা হন। জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। আজ সোমবার বেলা ১১টায় ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম সরকারী সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখ এসে পৌঁছান। সেখানে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় শেখ হাসিনা যুদ্ধ, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বর্তমান পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন এবং জার্মান ফেডারেল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রী সভেনজা শুলজেও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতীয় মুদ্রা টাকা ও রুপি ব্যবহারের ওপর জোর দেন।

উইমেন পলিটিক্যাল লিডারের (ডব্লিউপিএল) প্রেসিডেন্ট সিলভানা কোচ-মেহরিন, সিনিয়র ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ডেভেলপমেন্ট পলিসি অ্যান্ড পার্টনারশিপ অ্যাক্সেল ভ্যান টর্টসেনবার্গ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক পেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. স্যার নিক ক্লেগও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন।

শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে ‘ফ্রম পকেট টু প্ল্যানেট : স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় বক্তৃতা ও ছয়টি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়ন ছাড় করতে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে সে অর্থ জলবায়ু তহবিলে জমা দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি মিউনিখের বার্গারহাউস গার্চিং হোটেলে জার্মানি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close