নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী

সামাজিক অগ্রগতির জন্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন এমন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি যেগুলোয় কম অর্থের প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সব মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমাদের নিতে হবে। প্রকল্প বাছাই করার সময় সে বিষয়টা আমাদের একটু দেখা দরকার- যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যটা অর্জন করতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে দেওয়া প্রারম্ভিক ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যেসব প্রকল্প অল্প খরচ করলেই দ্রুত শেষ হয়ে যাবে, সেগুলো সম্পন্ন করে ফেলা উচিত। তাহলে আমরা আবার নতুন প্রকল্প নিতে পারব। কিছু কিছু প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তবে আমার মনে হয়, সেগুলোও দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। কারণ দ্রুত শেষ না করলে খরচ, যেমন বাড়ে তেমনি অহেতুক কালক্ষেপণ হয়, সেটা যেন আর না হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলছি আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমাদের নিতে হবে। প্রকল্প বাছাই করার সময় সে বিষয়টা আমাদের একটু দেখা দরকার- যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যটা অর্জন করতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বৈশ্বিক কারণেই কিছু অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে, তাছাড়া আমরা খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছিলাম। আমাদের প্রবৃদ্ধিও সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। দেশের উন্নয়নটা ত্বরান্বিত হচ্ছিল। এ সময় কোভিড-১৯ অতিমারী আসায় বিশ্বব্যাপী সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ল। এরপর যখন আমরা এটি মোকাবিলা করে এর থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি, তখনই এলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশন, এখন আবার গাজায় যেভাবে গণহত্যা চলছে এবং আক্রমণ চলছে, বিশ্বব্যাপীই একটি অশান্ত পরিবেশ। যার কারণে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ও বেশি লেগে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বের নানা কারণে চাপটা আমাদের ওপরও এসে পড়েছে।

যে কারণে তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এতে ভালো ফল পাওয়া যায়। তিনি এ সময় বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদের পাশাপাশি জলাভূমিগুলোয় মাছ চাষের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, তার নিজের এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়া) সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদের ব্যবস্থা করেছেন। যারা অনুপস্থিত মালিক তারা একটা অংশ পাবে, কিন্তু তাদের অংশটা একটু কম হবে, যারা শ্রম দেবে তারা একটা অংশ পাবে আর সমবায়ের জন্য একটা অংশ থাকবে- যাতে করে খরচটা চালানো যায়। আমি এটা করে যাচ্ছি এবং আমি মনে করি, এটাতে সফল হতে পারলে এবং সারা বাংলাদেশে এটা চালু করে দিতে পারলে কোনো জমি আর অনাবাদি থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু জিনিস আমাদের বাইরে থেকে আনতেই হয়। তারপরও সার্বিক উৎপাদন বাড়ানো গেলে এর শুভফলটা জনগণ পাবে, অন্যের ওপর আর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। তিনি উদাহারণ দেন, তার সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করায় এখন দেশের প্রয়োজনের ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশ আমদানিনির্ভর। কিন্তু এবারের আমাদের যে পরিমাণ শর্ষে হয়েছে তাতে ৪০ শতাংশ আমরা এ শর্ষের তেল দিয়ে বা ধানের তুষ থেকে সৃষ্ট রাইস ব্র্যান্ড ওয়েল উৎপাদন করছি, এভাবেই ধীরে ধীরে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তাছাড়া মাছ, মাংস, দুধ-ডিমের উৎপাদনও বেড়েছে এবং মানুষের এগুলো গ্রহণের হারটাও বেড়েছে। যারা আগে আমিষ খাবার কথা চিন্তা করত না, এখন তারাও নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে একেবারে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নটা আমাদের দরকার। কাজেই সেদিকে লক্ষ রেখেই আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close