মারুফ মালেক

  ২৪ অক্টোবর, ২০২১

প্রতিদিনের সংবাদকে এমডি এম এ মান্নান

স্বপ্ন ছিল বড় সহযোগিতা পাইনি

আমি, স্ত্রী, দুই মেয়ে গবেষক হয়েও এপিআই পার্কে জায়গা পাইনি

আমি ১৯৭৮ সালে দিনের বেলায় অফিস করতাম, আর রাতে হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। আমার বড় স্বপ্ন ছিল রেমো কেমিক্যাল একদিন বিশ্বে পরিচিতি পাবে। কিন্তু ঔষধ শিল্প সমিতি আমাকে কোনো সহযোগিতা করেনি, বরং তাদের কারণে আমি অনেক পিছিয়ে গেছি। নরসিংদীতে ঔষধের কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য যে এপিআই পার্ক তৈরি হচ্ছে, সেখানে আমাকে জায়গা দেওয়া হয়নি। আমি হাই কোর্টে রিট করেছি, কিন্তু তাতেও কোনো আশার আলো দেখছি না। আমি একজন কেমিক্যাল গবেষক, আমার স্ত্রী, দুই মেয়েও গবেষক। আমাকে, আমার স্ত্রী-সন্তানদের কি সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজে লাগাতে পারত না? যারা এপিআই পার্কে জায়গা পেল প্রায় সবারই ভাড়া করা গবেষক দিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমি সুযোগ পেলে দেশের মানুষের জন্য, ঔষধ শিল্পের জন্য অনেক ভালো কিছু করতে পারতাম। দেশের ঔষধ শিল্পের অনেক উন্নতি হতো। দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রেমো কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মান্নান এসব

কথা বলেছেন।

এম এ মান্নান বলেন, ঔষধ শিল্পের অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু এখনো ওষুধ তৈরির কাঁচামাল ৯৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। ৯৫ শতাংশ কাঁচামাল দেশে উৎপাদন হবে- এ স্বপ্ন নিয়ে এই ব্যবসায় যাত্রা শুরু করেছিলাম। আপনার কিছু টাকা আছে, আপনি ফার্মাসিটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করবেন? আপনার লোক লাগবে, মেশিন লাগবে- কয়েক দিনের মধ্যে সবকিছু পেয়ে যাবেন। কিন্তু কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করতে হলে এতটা সোজা না। আমার কেমিক্যাল স্কয়ার, বেক্সিমকোসহ প্রথমসারির সব কোম্পানি নেয়। চাহিদাও অনেক। কিন্তু জায়গা স্বল্পতার কারণে আমি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছি। আমার পরিবারের আমরা চারজন গবেষক কিন্তু এপিআই পার্কে আমাদের জায়গা না দিয়ে ঔষধ শিল্প সমিতির সবাই এপিআই পার্কের যায়গা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে।

এম এ মান্নান আরো বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান খুব বড় প্রতিষ্ঠান না। কিন্তু কেমিক্যাল টেকনোলজিতে যে ফাউন্ডেশন তা খুব মজবুত করে করেছিলাম। স্কয়ারের সামসং চৌধুরীও পাবনার একটা ছাপরার ভিতর কাজ শুরু করেছিলেন, আজকে তার প্রতিষ্ঠান দেশের নাম্বার ওয়ান ঔষধ কোম্পানিতে উন্নতি হয়েছে। সেটা কিন্তু বাস্তবায়ন করেছে তার পরবর্তী প্রজন্ম। আমার পরবর্তী প্রজন্ম যদি রেমো কেমিক্যালের হাল ধরত তাহলে হয়তো স্কয়ারের মতো আমার কোম্পানিও একদিন দেশসেরা কেমিক্যাল কোম্পানি হতো। তবে এখন আমি প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছি। দেশের বড় বড় ঔষধ কোম্পানি আমার কাছ থেকে কাঁচামাল নিচ্ছে। আমার কাঁচামালের এতটাই চাহিদা যে, দেশের কোম্পানিগুলোর চাহিদা মেটাতে পারছি না। আমার কেমিক্যাল নেসলে বাংলাদেশ কোম্পানি নিচ্ছে তাদের ফুডের জন্য। মানে আমার কোম্পানির কাঁচামাল খাদ্য এবং ঔষধ দুই সেক্টরেই কাজে লাগছে। এটা কি দেশের জন্য ইতিবাচক নয়? আমি পটাসিয়াম আয়োডেট, পটাসিয়াম আয়োডাইটও উৎপাদন করছি। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে বর্তমানে ২৫ ধরনের কাঁচামাল উৎপাদন করছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। যতদিন বেঁচে আছি ততোদিন সুযোগ পেলেই দেশের ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close