reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ মে, ২০২৪

ছিনতাই রোধে পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে

ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য নতুন কিছু নয়। আগেও ছিল, এখনো আছে। রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা যেন স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের অন্যান্য এলাকায়ও হরহামেশা ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ছিনতাই-কর্মকাণ্ড বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? আর ছিনতাইকারীদেরও বা কেন আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না?

সর্বশেষ গত ৮ মে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নবোদয় হাউজিং এলাকায় দিনদুপুরে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খাবার সরবরাহ করার জন্য এলাকার ৩ নম্বর সড়ক দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন জহিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। দুই ছিনতাইকারী তাকে পেছন থেকে ডেকে থামায়। পরে চাপাতি বের করে কোপ দিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় আশপাশে থাকা লোকজনও ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে পাশের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এর আগে গত ৪ মে রাতে রাত ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পাশের রাস্তায় অফিসের কাজ শেষে ধানমন্ডি থেকে বান্ধবীকে নিয়ে রিকশায় বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন এক নারী। দুটি মোটরসাইকেলে করে আসা ছিনতাইকারীরা তার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই নারী সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। ভাগ্যক্রমে ওই নারী বেঁচে গেলেও এমন পরিস্থিতিতে অনেক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে থাকে। ছিনতাইকারীরা ব্যাগ ধরে টান দিলে রিকশায় আরোহী যে থাকেন তিনি পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন বা মারা যান। কখনো কখনো ছিনতাইকারী ছুরিকাঘাত করেও পালিয়ে যায়। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস এবং পল্টন থানা একই এলাকায়, সেই এলাকাতেই ঘটেছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এ এলাকার সড়কে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন হলো, পল্টন থানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের মতো এলাকায়ও কীভাবে ছিনতাইয়ের সাহস পায় ছিনতাইকারীরা? শুধু মোবাইল-ব্যাগ বা টাকাপয়সা নয়, রাজধানীতে এখন ছিনতাইকারীরা যাত্রীবেশে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশাও ছিনিয়ে নিচ্ছে। গত এপ্রিলে রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকায় রিকশাওয়ালাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রিকশা ছিনিয়ে নেয় একটি ছিনতাইকারী চক্র। পরে শাহ আলম নামে ওই রিকশাওয়ালাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনরা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ এপ্রিল মারা যান তিনি।

ঢাকা মহানগরকে ছিনতাইমুক্ত করতে এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা ও চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গত বছর টাস্কফোর্স গঠন করে ডিএমপি। ১৯ সদস্যের এই টাস্কফোর্স রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের বিভিন্ন হটস্পট শনাক্ত করে। ছিনতাই দমনে চলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় অভিযান। গ্রেপ্তার করা হয় শত শত ছিনতাইকারীকে। তবুও উৎপাত কমছে না তাদের। আর কয়েক দিন পরই জমে উঠবে কোরবানির পশুর হাট। এ সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে।

ছিনতাইকারীদের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত। এ ছাড়া অনেকে ছিনতাইকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ঢুকে জামিনে বের হয়ে আবার ছিনতাই শুরু করে। ছিনতাইয়ের ঘটনা যেন আর না বাড়ে, এমন প্রত্যাশা আমাদের সবারই। জনমনে আতঙ্ক কাটাতে ছিনতাইকারীদের সমূলে নির্মূল করা অতীব জরুরি। এ অবস্থায় ছিনতাইকারীদের প্রতিরোধে পুলিশের তৎপরতা আরো বাড়িয়ে জনগণের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close