reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ মার্চ, ২০২৪

টিসিবির পণ্যে অনিয়ম কাম্য নয়

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলছে। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না। এ অবস্থায় টিসিবির ট্রাকসেল এখন সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসার স্থলে পরিণত হয়েছে। বাজার যখন অস্থির তখন স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে টিসিবির ট্রাকসেল স্বস্তিদায়ক।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এমন একটি সংস্থা, যেটি কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আপৎকালীন মজুদ গড়ে তুলে প্রয়োজনীয় সময়ে ভোক্তা সাধারণের কাছে স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। সারা বছর খোলাবাজারে চাল, ডাল, চিনি এবং ভোজ্য তেল বিক্রি করে সাধারণ মানুষের চাহিদা মেটাতে কাজ করে টিসিবি। সরবরাহের ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধি রোধ করে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রেখে জনগণের স্বার্থরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখাই এর লক্ষ্য। চড়া মূল্যের বাজারে টিসিবি দাঁড়ায় মানুষের পাশে। ফলে, বাজার মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে পণ্য কিনতে পারেন ভোক্তারা। বিভিন্ন সংকটে সাধারণ মানুষের পাশে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দিয়ে সাহায্য করেছে। তা সত্ত্বেও স্বল্প আয়ের মানুষদের সরকারি এই সুবিধা পেতে কখনো কখনো হয়রানির শিকার হতে হয়। কার্ড বিতরণে অনিয়ম, এক স্থান থেকে পণ্যের ট্রাক আরেক স্থানে নিয়ে যাওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য বিক্রি না করা, পণ্য গায়েব করে দেওয়া, কালোবাজারে বিক্রিসহ নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে সরকারের কঠোর বার্তা, গ্রেপ্তার, তদন্ত কমিটিসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থায়ও বন্ধ হচ্ছে না অনিয়ম। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই সরকারের এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রতিদিনের সংবাদে গতকাল রবিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাতকরণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গেল বুধবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোলেমান আলীর কাছে অভিযোগ করেছেন ডিলাররা। শহিদুল ইসলাম অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলমান। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬১ জন ডিলারের মাধ্যমে ৯২ হাজার ৬৮৮ জন স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে কম দামে টিসিবি পণ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল ও তেল বিক্রি শুরু করছে। তবে টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাতকরণে এক টাকা ও শ্রমিক মজুরি এক টাকা করে ডিলারদের কাছে আদায় করেন শহিদুল ইসলাম ও মিন্টু। ফলে প্রতিবার ডিলারদের কাছ থেকে শুধু প্যাকেজিং বাবদ ৯২ হাজার ৬৮৮ টাকা আদায় করেন তিনি। এভাবে গেল সাত মাসে আদায় করা হয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮১৬ টাকা। আর শ্রমিকদের খরচেও নেওয়া হয়েছে এক টাকা করে। সবমিলে ডিলারদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ১০ লক্ষাধিক টাকা।

নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে স্বল্পমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। সংকটেও সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে এই পণ্য বিক্রি করছে। সেখানে এত সব অনিয়ম মেনে নেওয় যায় না। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close