reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ জানুয়ারি, ২০২৪

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাক অর্থনীতি

অর্থনীতিতে আমরা বেশ কিছু জায়গায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। বিশেষ করে রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি ও আমদানি পেমেন্টের মধ্যে সংকট বিরাজ করছে। এ বছর এটি কেমন হবে তা নির্ভর করছে আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর। এ ছাড়া প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা ও বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হবে, তার ওপরও নির্ভর করে এসব। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারকে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২২২ আসনে জয়ী হয়েছে দলটি। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছিল নানা সংকট। ডলার সংকট, হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতি, এমনকি বিদেশি বিনিয়োগও তুলনামূলক ছিল কম। তবে আশার বাণী শোনাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় অচিরেই অর্থনীতিতেও স্বস্তি আসবে। এরই মধ্যে রেমিট্যান্সপ্রবাহে গতি বেড়েছে। রপ্তানি আয়ে এখন পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনও ঠেকানো গেছে।

বলা বাহুল্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সব ধরনের জ্বালানি তেলের ৫০ শতাংশের মতো বাড়ানোর পর মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে যায়। ২০২৩ সাল জুড়েও মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভব করেছেন সাধারণ মানুষ। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অচিরেই অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হবে। নির্বাচনের আগে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন না। এখন একটি সুষ্ঠু ভোট হয়ে গেল। ফলে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে মনোযোগ দেবেন। অর্থাৎ ব্যবসায়ীরা নিজ থেকেই বিনিয়োগ করতে শুরু করবেন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের আত্মবিশ্বাস এসেছে। মানুষ বিশ্বাস করছে, সরকার প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পেরেছে, সেহেতু অর্থনীতি অচিরেই ঘুরে দাঁড়াবে। বিদেশিদের নিয়ে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা হলেও এখন মনে হচ্ছে বিদেশিরা এই নির্বাচন দেখে খুশি হয়েছে। দেশের মানুষ এই সরকারকে পেয়ে খুশি হলে বিদেশিরা আর নাক গলাতে আসবে না। আর এখন পর্যন্ত বাইরে থেকে কোনো বিরূপ মন্তব্য আসেনি। এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। নির্বাচন সামনে রেখে অপ্রিয় কিছু নীতি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন যেহেতু একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে, অর্থনীতির স্বার্থে ডলারের রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার মতো আরো অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এতে এখন মূল্যস্ফীতি তাৎক্ষণিক কিছুটা বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। এ ছাড়া সরকার নতুন করে জনগণের সমর্থন পাওয়ার পর রাজস্ব আহরণে মনোযোগ দেবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে পারলে এর ইতিবাচক ফল আসবে।

আমরা মনে করি, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারকে অর্থনীতির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। হয়তো সরকার এবার অর্থনীতির সংস্কারের দিকেই মনোযোগ দেবে। সবার আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, কমাতে হবে শুল্ক হার। সরকার এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close