![reporter](/templates/web-ps/images/rp_icon.png)
শিক্ষার্থীদের ফেল কমাতে হবে
![](/templates/web-ps/images/news-logo.jpg?v=4)
উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত রবিবার। পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। গত চার বছরের মধ্যে এবার পাসের হারে বেশ পিছিয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা, জিপিএ ৫-এর সংখ্যা কমে প্রায় নেমে এসেছে অর্ধেকে। ২০১৯ সালে পাস করেন ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, আর জিপিএ ৫ পান ৪৭ হাজার ২৮৬ শিক্ষার্থী। চলতি বছর ফেল করেছেন তিন লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী, ধস নেমেছে জিপিএ ৫-এর ক্ষেত্রেও।
২০২০ সালে মহামারির কারণে পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। এতে সবাই পাস করেন, জিপিএ ৫ পান ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। দুই বছর কোভিড মহামারির কারণে পরীক্ষা নেওয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। ফলে ২০২১ সালে ৯৫ দশমিক ২৬ ও ২০২২ সালে ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেন। জিপিএ ৫ পান যথাক্রমে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ ও ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। কোভিড মহামারির পর এ বছরই প্রথম পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হলো। তাতে গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ পয়েন্ট, জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন। মহামারির আগের বছরের সঙ্গে তুলনা করলে পাসের হার ও জিপিএ ৫-এর সংখ্যা কিছুটা ভালো বলা যায়।
প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪৪, বরিশালে ৮০ দশমিক ৬৫, চট্টগ্রামে ৭৪ দশমিক ৪৫, কুমিল্লায় ৭৫ দশমিক ৩৯, রাজশাহীতে ৭৮ দশমিক ৪৬, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪৮, সিলেটে ৭১ দশমিক ৬২, ময়মনসিংহ ৭০ দশমিক ৪৪ ও যশোরে ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৯০ দশমিক ৭৫ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৯১ দশমিক ২৫ শতাংশ। ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে পাসের হার এবং জিপিএ ৫ কমা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘গত বছর বা করোনার কারণে দু-তিন বছরের ফলাফলের তুলনা করবেন না। গতবার পরীক্ষা সহজ ছিল। কম বিষয়, কম সময় ও কম নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়েছে। এজন্য পরীক্ষাটাও তুলনামূলক কঠিন হয়েছে। এতে পাসের হার ও জিপিএ ৫ কিছুটা কমেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আগের যে পরীক্ষাগুলো হয়েছিল, সেখানে কেমন রেজাল্ট হয়েছিল সেটা দেখতে হবে। সেটার সঙ্গে মেলালে বোঝা যাবে। বিশ্লেষণ করুন- দেখবেন তখনকার চেয়ে এবার ফলটা ভালো।’ তবে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষায় বসেছেন তেমনটিও নয়। যদি ঘাটতি থেকেই থাকে, তাহলে তা পূরণ করে পরীক্ষায় বসানো উচিত ছিল। পূর্ণ নম্বর-সময়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নিলেই ফলাফল খারাপ হবে, এটা কোনো যৌক্তিক কথা নয়।
পরীক্ষা কম নম্বরে হোক বা বেশি নম্বরে হোক; ফেল কমাতে হবে। ফেল করলে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে আঘাত পান। সেখান থেকে একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে ঘুরে দাঁড়ানো কষ্টসাধ্য। অনেকের পরিবারে আর্থিক সমস্যা থাকে। তারা একবার ফেল করে পরে আর সেভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন না। সে ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার আশঙ্কাই থাকে বেশি। তাই এদিকটায় নজর দিতে হবে।
"