reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ মার্চ, ২০২৩

রমজানে ব্যবসায়ীদেরও সংযমী হতে হবে

রমজান এলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে হবে- এটা যেন ব্যবসায়ীদের অঘোষিত নিয়ম হয়ে গেছে। এজন্য তারা নানা অজুহাত খুঁজতে থাকে। এবার রমজান শুরুর আগেই অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পণ্যের দাম। অথচ প্রচুর আমদানি হয়েছে, পর্যাপ্ত পণ্য মজুদ আছে। তবু এক অজানা কারণে বেড়ে যাচ্ছে দাম। ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। পেঁয়াজে বাজার সয়লাব হলেও কয়েক দিন ধরে অল্প অল্প করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। রোজা শুরুর দিকে নাগালের মধ্যে শুধু ছোলার দাম। তারপরও গত বছরের তুলনায় বেশি। আর চিনির দামে অস্থিরতার কারণে সরকার ভ্যাট কমিয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, চিনিও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।

এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। কেজি প্রায় ৩০০ টাকা ছুঁইছুঁই। গরুর মাংসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ভরসা ছিল ব্রয়লার মুরগি। কিন্তু এবার ব্রয়লার মুরগিও যেন দুর্লভ হয়ে গেছে। অথচ ব্রয়লারের উৎপাদন খরচ কিন্তু অনেক কম। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, মুরগির খাবারসহ অন্যান্য ব্যয় বৃদ্ধির পরও এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন ব্যয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। অন্যদিকে, প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে খরচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। তাতে বর্তমানে উৎপাদনসহ অন্য খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হতে পারে। তা ছাড়া রমজানে সাধারণত সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে চিনির। এবার আগের চেয়েও এই পণ্যটির মজুদ বেশি। সরকারও চিনির চাহিদার প্রতি নজর রেখে ভ্যাট কমিয়েছে। কিন্তু বাজারে ভ্যাট কমানোর কোনো প্রতিফলন নেই। নানা অজুহাতে দাম বাড়ছে। রমজান শুরু হওয়ার আগেই প্রতি কেজিতে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছে কমপক্ষে ৫ টাকা। রমজান শুরুর আগের দিন দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ চিনির দাম চার হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অথচ ১০ দিন আগেও বাজারে চিনির পাইকারি মূল্য ছিল ৩ হাজার ৭৫০ টাকা। চট্টগ্রামের চৌমুহনী বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি সাদা চিনির দাম ঠেকেছে ১১৫ থেকে ১১৮ টাকায়, যা গত সপ্তাহেই ছিল ১০৪ টাকা। লাল চিনি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি কেজির দাম উঠেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস। স্বাভাবিক কারণেই এই সময়ে কিছু কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা বেড়ে গেলে সরবরাহ আর চাহিদার ভারসাম্য নষ্ট হয়। চাহিদা বাড়ার সুযোগটা কাজে লাগান ব্যবসায়ীরা। তারা অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে দেন। সিয়াম সাধনার মাসে শুধু রোজা রাখলেই যে সংযম পালন হয়, বিষয়টি এমন নয়। এর সঙ্গে আরো অনেক কিছু জড়িত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে রোজাদারদের ভোগান্তিতে ফেলা সংযমের মধ্যে পড়ে না। তাই এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সংযমী হতে হবে, যেন সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে না পড়ে। একই সঙ্গে কেউ যাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে কিংবা মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল না করতে পারে, সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর এবং বাজার মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। মোটকথা, বাজার স্থিতিশীল রাখতে যা যা করণীয় তা করতে হবে। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close