reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ মার্চ, ২০২৩

পরিকল্পিত ঢাকার জন্য সচেতনতা জরুরি

‘ঢাকা’ এ দেশের মানুষের প্রাণ। জীবনের এমন কোনো প্রসঙ্গ নেই, যার সঙ্গে ঢাকা জড়িত নয়। ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য কয়েক শ বছরের। মুঘল আমল, ইংরেজ আমল, পাকিস্তান আমল, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ঢাকার ইতিহাস এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই ঢাকা নিয়ে কথামালার শেষ নেই। কিন্তু বর্তমানে ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল নগরী। জনসংখ্যার এই চাপ সামাল দিতে গিয়ে এই নগরীকে প্রচণ্ড হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন সারা দেশ থেকে যে পরিমাণ মানুষ ঢাকায় ঢুকছে তাতে খোলা জায়গা, খেলার মাঠ বা সবুজ এলাকা রক্ষা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিকল্পিত ঢাকার জন্য সবার দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা জরুরি। সে জন্য নীতিনির্ধারক, নগর-পরিকল্পনাবিদসহ সমাজের সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। সবাইকে বসবাসযোগ্য ঢাকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে হবে।

বলা সংগত, বাংলাদেশে যেকোনো পরিকল্পনা বা জননীতি বাস্তবায়ন করতে গেলে যখনই তা কারো স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তখন সেই পরিকল্পনার বিপক্ষে তিনি অবস্থান নেন। এ ধরনের মানসিকতা কমিউনিটির সবার মঙ্গলের জন্য পরিহার করতে হবে। গত সোমবার বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘ঢাকা নগরীর সবুজ এলাকা এবং এর রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকার ভেতরে জনসংখ্যা কত হবে, তাদের জন্য কী কী নাগরিক সুবিধা প্রয়োজন তা আমাদের চিন্তা করতে হবে। যেখানে পাঁচ হাজার লোকের নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা আছে, সেখানে যদি বিশ হাজার লোক বসবাস করে তাহলে কীভাবে বসবাসযোগ্যতা বজায় থাকবে। এই বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। এ সময় মন্ত্রী ঢাকা ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দায়িত্ব পালন করছেন সর্বোচ্চ পরিশ্রম ও আন্তরিকতা দিয়ে। ড্যাপ প্রণয়নের ক্ষেত্রে বসবাসের স্থান, খোলা জায়গা, খেলার মাঠ, সবুজ ও জলজ এলাকা থেকে শুরু করে অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভালো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজসহ সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করি, আমরা যার যার দায়িত্ব পালন করলে দেশ ও সমাজ এগিয়ে যাবে। নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে কাজ করলে জাতির পিতার সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

বলা বাহুল্য, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ করতে পারব। সুষ্ঠু ও পরিকল্পিতভাবে ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্য এলাকাগুলো গড়ে তোলা গেলে নিঃসন্দেহে অপরাধের মাত্রাও অনেক কমে যাবে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে উন্নত করে কাজের বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে অনেক মানুষই গ্রাম বা মফস্বলে বসে ভালো উপার্জন করতে পারবে। তখন স্বাভাবিকভাবে অপরাধের মাত্রাও কমবে। ঢাকা থেকে অনেক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া গেলে ঢাকায় তৈরি করা যাবে শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠ এবং পার্কের মতো সামাজিক বিনোদনের জায়গা। অপরাধের একটি তত্ত্ব বলে, শিশু-কিশোররা অপরাধে জড়ায় যখন ইতিবাচকভাবে সময় কাটানোর সুযোগ তাদের থাকে না। তাই পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মতো ঢাকাতেও থাকতে হবে প্রচুর পার্ক ও খোলা জায়গা। এতে বিশেষ করে শিশু-কিশোররা তাদের প্রাণচাঞ্চল্য ও সময় ইতিবাচকভাবে প্রয়োগ করতে পারবে। গড়ে উঠবে বাসযোগ্য ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close