reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুন

শিশুরা একটি জাতির সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আজ যারা শিশু তাদের যদি আমরা সযত্নে, সুস্থ-সুন্দর পরিবেশে বিকাশ লাভের সুযোগ করে দিই, তাহলে ভবিষ্যতে তারা হবে এ দেশের এক-একজন আদর্শ, কর্মক্ষম, সুযোগ্য নাগরিক। একসময় তারা দেশের প্রতিটি সেক্টরে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে এ দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির পথ প্রদর্শক। সেই নিরিখে তাদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা পরিবার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শিক্ষা-দীক্ষা ও নৈতিকতা শেখানোর মাধ্যমে তাদের যোগ্য মানুষ গড়ে তোলা সম্ভব। আমাদের সংবিধানেও শিশু অধিকার সংক্রান্ত আইন রয়েছে। এসব আইনের প্রয়োগের বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।

বলা সংগত, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক ১৮ বছরের নিচে আর পাঁচ বছরের নিচে শিশুর সংখ্যা দুই কোটিরও বেশি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সংক্ষিপ্ত সময়ে শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ জন্য তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে স্কাউট আন্দোলনে জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) গাজীপুরের মৌচাকের জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩২তম এশিয়া-প্যাসিফিক এবং ১১তম জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমি প্রতিটি শিশুকে দেশের একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। স্কাউটদের নৈতিক ও জীবনমুখী শিক্ষা দিয়ে, সেবা দেওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন করে দেশপ্রেমিক ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে তার ছোট ভাই শেখ রাসেলের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আমি যখনই শিশুদের মাঝে আসি তখন আমার ১০ বছরের ছোট ভাই শেখ রাসেলকে খুঁজে পাই। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা, মা, ভাইদের, ভ্রাতৃবধূদের সঙ্গে ঘাতকরা সেদিন তাকেও রেহাই দেয়নি। তাই আমি চাই আমাদের দেশের শিশু-কিশোরদের জীবন নিরাপদ হোক, সুন্দর হোক, অর্থবহ হোক। কারণ আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর বাংলাদেশের কর্ণধার হবে। আমাদের সব শিশু সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক।

আমরা জানি যে, শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দারিদ্র্য অন্যতম বাধা। সরকার সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য একটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল প্রণয়ন করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সরকার এক কোটিরও বেশি মানুষকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। শিশুরাও এসব কর্মসূচির উপকারভোগী। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেছি। ৯৮ শতাংশ স্কুলগামী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা গেছে। এছাড়া শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃমৃত্যুহার কমিয়ে আনা হয়েছে। তা সত্ত্বেও শিশুদের ঝরে পড়ার হার কম নয়। এখনো অনেক পথশিশু চোখে পড়ে, যাদের ঘর নেই, পড়াশোনা করার ব্যবস্থা নেই। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে হলে এসব শিশুকেও মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমরা চাই শতভাগ শিশুই স্কুলমুখী হোক। শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা শিখে নিজেকে এক-একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুক। আর এ জন্য সচেতনতার সঙ্গে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে পরিবার ও রাষ্ট্রকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close