reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রকল্পের কাজ শেষ হোক নির্ধারিত সময়ে

নয়টার ট্রেন কয়টায় ছাড়ে- এ রকম একটি কথা লোকমুখে প্রচলিত আছে। নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি বা ট্রেন না চলাচল বা নির্দিষ্ট সময়ে কোনো কাজ শেষ না হওয়াকে কেন্দ্র করে কথাটির প্রচলন সম্ভবত। সে যা-ই হোক, আগে শোনা যেত ট্রেন শিডিউল মেনে চলে না, এখন শোনা যাচ্ছে- রেলের কোনো প্রকল্পই সময় মেনে চলে না। রেলই যেখানে সময় মেনে চলে না সেখানে রেলের প্রকল্প সময়মতো ‘চলবে’ সেটা আশা করি কীভাবে! রেল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায় প্রায়ই। এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে অনেক। তবুও রেল যেন রেলের মতো চলে না। এটাই আমাদের আক্ষেপ।

বলা প্রাসঙ্গিক, গত বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত পরিষেবা দিতে বাংলাদেশে রেলওয়ের ৩৫টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাংলাদেশ রেলওয়ের আছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে ২৫টি প্রকল্পের সময়সীমা ১ থেকে ১১ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। যার মধ্যে এগুলোর নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে। যেমন- একটি প্রকল্পের ব্যয় ৮৭৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ৩৫টি প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ২০ কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধনের পর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ২৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ রেলওয়েকে আরো ৩২ হাজার ৮ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে হবে, যা পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয়ের চেয়েও অধিক। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এগুলোর মধ্যে বাকি ১০টি প্রকল্পের সময়সীমা এখনো শেষ হয়নি, আর একটির কাজই এখনো শুরু হয়নি। ফলে সময়সীমাও বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোতে ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনাও আছে। কারণ সময়সীমা বাড়লে সাধারণত প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হলে অর্থও বেশি ব্যয় হয়। প্রকল্পগুলোতে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, তার বেশির ভাগই বিদেশি ঋণ। অন্যদিকে, উন্নত রেল পরিষেবার জন্য মানুষের অপেক্ষাও আরো দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যা কোনোভাবে কাম্য নয়। আমাদের এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

কয়েক দশক ধরে অবহেলিত রেলপথকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সরকার যে পরিকল্পনা নিয়েছে তা যেন বারবার হোঁচট খাচ্ছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলওয়ের উন্নয়নের জন্য ৭১ হাজার ১১৩ কোটি টাকা এই খাতে ব্যয় করেছে। সরকারের এই ব্যয় বৃথা যেতে পারে না। রেলওয়েকে মানুষ বরাবরই একটি ‘অলাভজনক’ সরকারি সংস্থা হিসেবে জেনে আসছে। কিন্তু এটা কেন? সরকার এই দুর্নাম ঘুচাতে বারবার চেষ্টা করলেও কোন অদৃশ্য কারণে তা আলোর মুখ দেখছে না তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। নানা অনিয়ম দূর করাসহ চলমান যে প্রকল্পগুলোর কাজ বিলম্বিত হওয়া নিয়ে কথা উঠেছে তা যেন বাস্তবায়ন করা হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত বলে আমরা মনে করি। আমরা চাই রেল সেবায় গতি বাড়ুক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close