reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ নভেম্বর, ২০২২

কিডনি রোগ প্রতিরোধে চাই যথাযথ ব্যবস্থা

কিডনি মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর মাধ্যমেই শরীরের সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ বের হয় মূত্রের মাধ্যমে। এছাড়াও শরীরের তরল ভারসাম্য রক্ষার কাজটিও করে থাকে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটি। কিডনি কার্যকরভাবে কাজ বন্ধ করে দিলে রক্ত ছেঁকে শরীর থেকে তরল বর্জ্য বের করতে রোগীদের ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। তবে এ চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় অর্থসংকটে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেন বেশির ভাগ রোগী। কিডনি রোগের সাধারণ লক্ষণ, জটিলতা সম্পর্কে অনেকেই জানতে পারেন না। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় কোনো উপসর্গ না থাকায় বোঝা যায় না কিডনিজনিত জটিলতা আছে কি-না বা থাকলেও সেটা কতটুকু। প্রাথমিক অবস্থায় সমস্যাটা ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ বা অনেকটাই ভালো থাকা যায়। কিন্তু এমন একটা সময়ে গিয়ে সমস্যা ধরা পড়ে তখন হয়তো রোগীর করার আর কিছুই থাকে না এবং চিকিৎসকেরও বেশি কিছু করার থাকে না। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই এই বিষয়গুলো জানেন না। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষা কম, সচেতনতা কম, এমনকি জানার আগ্রহও কম।

প্রতিদিনের সংবাদের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে কিডনি রোগী আছে প্রায় দুই কোটি। তাদের মধ্যে প্রতি বছর কিডনি বিকল হয় ৪০ হাজার রোগীর। এই রোগীদের ৭৫ শতাংশই বিভিন্ন সময়ে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজনজনিত চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশির ভাগ রোগীকে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিতে হয়। এছাড়া হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে বছরে আরো ২০ হাজার রোগী মারা যান। গত শনিবার কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এটা সত্যিই দুঃখজনক যে, দেশে প্রতিনিয়ত কিডনি রোগী বাড়ছে এবং আরো ভয়াবহ খবর হলো কিডনি রোগীদের যাদের ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয় তাদের বেশির ভাগই অর্থাভাবে চিকিৎসা চালিয়ে নিতে পারেন না, আর কিডনি সংযোজনজনিত চিকিৎসা না পেয়ে অনেককেই মৃৃত্যুবরণ করতে হয়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করানোর কারণে দেশে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ যথাসময়ে শনাক্ত হয় না। ফলে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তারা মনে করেন, এ জন্য মরণোত্তর অঙ্গদান বা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিষয়ে লোকজনকে আরো উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মৃত ব্যক্তির কিডনি দান করা হলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। মৃত ব্যক্তির অঙ্গদানের বিষয়ে অনেক মানুষের ভুল ধারণা রয়েছে। সেসব দূর করতে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন; মৃত্যুর পর অঙ্গদানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

২০১৮ সালে মানবদেহে অঙ্গ-প্রতঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন পাস হয়েছে। দেশে রোগীর জীবিত আত্মীয়ের দান করা কিডনি প্রতিস্থাপন করা হলেও এখনো ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গ এখনো প্রতিস্থাপিত হয়নি। আমরা মনে করি, এ বিষয়টিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্রুত নজর দেওয়া প্রয়োজন। যাতে ব্রেন ডেথ ব্যক্তির অঙ্গও কিডনি রোগীদের শরীরে স্থাপন করা যায়। আমরা চাই, কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে বা সংযোজনজনিত জটিলতা নিয়ে আর কাউকে যেন অকালে জীবন দিতে না হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close