চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই হিমালয় পর্বতে যৌথ সামরিক মহড়া চালাতে যাচ্ছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। আগামী অক্টোবরে ভারত-চীনের বিরোধপূর্ণ সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার (৬ আগস্ট) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ কথা জানিয়েছেন ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তা। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে বেইজিং-ওয়াশিংটনের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ খবর এলো।

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের আউলি শহরের কাছে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শহরটি হিমালয় পর্বতের দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় মহড়া চালাবে দিল্লি ও ওয়াশিংটন। সামরিক মহড়ার প্রসঙ্গে দুদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।

আউলি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি ভারত ও চীনকে বিভক্ত করেছে। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের পর থেকে দুদেশ এই এলাকার মালিকানা দাবি করে আসছে।

২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে জড়িয়েছিল দুদেশের সেনাবাহিনী। এতে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হন। পরে চীন দাবি করে, তাদেরও ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকেই দিল্লি-বেইজিংয়ের সম্পর্ক চরম অবনতিতে পৌঁছায়।

চীনের তাইওয়ানে হামলার ‘মহড়া’ দায়িত্বজ্ঞানহীন : চীনের বিরুদ্ধে উসকানি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন তাইওয়ানে হামলার মহড়া চালিয়েছে বলে তাইপে দাবি করার পর এমন মন্তব্য করলো ওয়াশিংটন। রবিবার তাইওয়ান দাবি করেছে, চতুর্থ দিনে গড়ানো চীনের মহড়ায় পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। মোতায়েন করা হয়েছে উড়োজাহাজ ও জাহাজ।

তাইওয়ান ও চীনের মধ্যকার এই উত্তেজনা বেড়েছে তাইপেতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের পর। চীন তার এই সফরকে তাইওয়ানের ওপর নিজেদের সার্বভৌম অধিকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে। তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে।

তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা শনিবার তাইওয়ান প্রণালিতে চীনের ‘অনেক’ বিমান ও যুদ্ধজাহাজের অভিযান প্রত্যক্ষ করেছে। স্বায়ত্তশাসিত গণতান্ত্রিক এ দেশের মূল দ্বীপে হামলা চালানোর ভান করা হবে বলে তারা মনে করছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাইপের সামরিক বাহিনী ‘তাইওয়ান প্রণালির চারদিকে সামরিক অভিযান চালানো চীনের বিমান ও যুদ্ধজাহাজের একাধিক বহর শনাক্ত করেছে। আর এসবের মধ্যে কিছু বিমান ও জাহাজকে মধ্যমা লাইন অতিক্রম করতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে তাইওয়ানের মূল দ্বীপে হামলা চালানোর ভান করা হবে বলে তারা মনে করেন।’ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, চীনের তাজা গুলির মহড়ার উপযুক্ত পাল্টা পদক্ষেপ তাইওয়ান।

এরপরই ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছে, চীন উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলেন, বিদ্যমান অবস্থার পরিবর্তনে এসব কর্মকাণ্ড চীনের উত্তেজনা বৃদ্ধি। এসব পদক্ষেপ উসকানিমূলক, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ভুল হিসাবের ঝুঁকি বাড়ায়। মুখপাত্র আরো বলেন, তাইওয়ান প্রণালিতে আমাদের দীর্ঘদিনের অবস্থান শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও এসব পদক্ষেপ বেমানান। চীন অভিযোগ করে আসছে, পেলোসির সফর তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলেছে।

"