চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৫ মে, ২০২৪

‘এনএসআই কর্মকর্তা’ পরিচয়ে প্রতারণা, স্বামীসহ মমতাজ গ্রেপ্তার

এসএসসি পাস করে চট্টগ্রামে চাকরি খুঁজছিলেন এক যুবক। ‘এনএসআই কর্মকর্তা’ বলে পরিচয় দেওয়া এক নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। যুবকটি ধরেই নিয়েছিলেন, তার হয়তো কপাল খুলে গেছে। কারণ ওই নারী তাকে এনএসআইতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে এটি ছিল ফাঁদ। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খুইয়েছেন যুবক।

নিরুপায় এ যুবক পরে আশ্রয় নেন র‌্যাবের দুয়ারে। অবশেষে স্বামীসহ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন সেই নারী। গ্রেপ্তাররা হলেন মমতাজ বেগম (৩৪) ও তার স্বামী মুজিবুর রহমান (৪৬)।

গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব-৭।

গত বুধবার সীতাকুণ্ড থানার প্রেমতলা কলেজ রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই নারী ও তার স্বামীকে বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭-এর একটি দল। এ সময় ৯৬০ পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে এনএসআইতে সোর্স, ওয়াচার কনস্টেবল, ফিল্ড অফিসারসহ বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলতেন এই দুজন। চাকরি দেওয়ার কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন। পরে খোঁজ নিলে জানা যায়, মমতাজ কখনোই এনএসআইতে ছিলেন না।

জানা যায়, এসএসসি পাস করার পর থেকে চাকরি খুঁজছিলেন মঞ্জুর আলম। ২০২১ সালে ভাগ্নির বিয়েতে মমতাজ বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয়। মমতাজ নিজেকে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন, এনএসআইয়ের উপপরিচালক হিসেবে পরিচয় দেন। এ সময় মঞ্জুর আলমকে এনএসআইয়ের ফিল্ড অফিসার পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রলোভনে পা দিয়ে মঞ্জুর তার বোন জামাই, মামা ও বন্ধুকেও এই ফাঁদে ফেলেন। একই বছরের ২২ নভেম্বর মঞ্জুর আলম ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তার মামা একরাম হোসেন ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বন্ধু নয়ন ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং তার বোন জামাই ১২ লাখ টাকা মোট ৩৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মমতাজ বেগমকে দেন। ২ বছর ৬ মাস পর এনএসআইয়ের সার্কুলার হলেও মমতাজ বেগম তাদের চাকরি দিতে ব্যর্থ হন। পরে খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন, মমতাজ বেগম প্রতারণা করেছেন। এনএসআইয়ে তিনি কখনো ছিলেন না। এরপর টাকা ফেরত চাইলে মমতাজ বেগম ও তার স্বামী তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। নিরুপায় হয়ে র‌্যাব-৭-এর আশ্রয় নেন তারা। বিষয়টি আমলে নিয়ে র‌্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) প্রতারক চক্রকে ধরতে মাঠে নামে।

র‌্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. শরীফ-উল-আলম বলেন, মমতাজ ও তার স্বামী এনএসআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে চাকরি প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করে আসছেন। এ ছাড়া মমতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্য ইয়াবা বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে খুচরা বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারদের সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close