নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বসন্তে প্রাণ ফিরেছে মেলায়

মেলার ১৫তম দিন

বাঙালির হাজারো আবেগমাখা প্রাণের মেলা বইমেলা। নতুন রং আর বইয়ের ভাঁজখোলা গন্ধে মেতে ওঠে পুরো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। ফাল্গুনের ঝিরিঝিরি বাতাসে এ গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। ঋতুরাজ বসন্তে বইমেলা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পাঠক-দর্শকদের পদভারে বইমেলা মুখর হয়ে উঠুক- এ প্রত্যাশা সবার।

অমর একুশে বইমেলার ১৫তম দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার মেলা শুরু হয়েছে বিকেল ৩টায়। এদিন মেলায় প্রকাশিত হয়েছে ৯৭টি নতুন বই। এদিন রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : আবদুল হালিম বয়াতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোবায়ের আবদুল্লাহ।

এ সময় আলোচনায় অংশ নেন মো. নিশানে হালিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাইদুর রহমান বয়াতি। তিনি বলেন, আবদুল হালিম বয়াতির মতো প্রতিভাবান সাধককবি এদেশে বিরল। বাংলার লোকসংগীতের ইতিহাসে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার সৃষ্টি ও সংগীতের মধ্য দিয়ে আবদুল হালিম ভক্ত-শ্রোতাদের অন্তরে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক মাসুদুল হক, কবি ও সম্পাদক এজাজ ইউসুফী, গবেষক কাজী সামিও শীশ এবং শিশুসাহিত্যিক রুনা তাসমিনা।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, মিহির মুসাকী, শফিক সেলিম, খোকন মাহমুদ এবং ইমরুল ইউসুফ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী এ বি এম রাশেদুল হাসান, শিরিন জাহান এবং তালুকদার মো. যোবায়ের আহম্মেদ টিপু। সরেজমিন দেখা গেছে, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউ বই দেখছেন। কেউ পছন্দের লেখকের বই খুঁজছেন। বই কেনার পাশাপাশি ছিল লেখকদের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও কবিতা আবৃত্তি। মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছে ৫ বছরের নন্দন। সে বলে, মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। আমি বই কিনব। ছবি আছে এমন বই কিনব।

আবার নতুন কিছু লেখকের বই বিক্রি কিনতে দোকানের সামনে ক্রেতাদের ছিল বাড়তি আগ্রহ। আবার অনেকে বইয়ের ক্যাটালগ সংগ্রহ করেছেন। জানান, খুব শিগগির আবার কোনো একদিন এসে সেদিনেই কিনে নেবেন পছন্দের বইটি। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় এদিন মেলায় লোকজনের উপস্থিতি ছিল কম। তারা জানান, প্রতি বছর শেষদিকে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়ের পাশাপাশি বিক্রিও হয়ে থাকে। এ বছর এমনটাই হবে বলে মনে করছেন তারা।

মেলায় দর্শনার্থী থাকলেও এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে চলে যাচ্ছেন। বিক্রেতেরা বলেন, সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোয় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় থাকায় এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশুচত্বর থাকবে। এ কর্নারকে শিশু-কিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। মাসব্যাপী বইমেলায় এবারও ‘শিশুপ্রহর’ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘাস ফড়িংয়ের কর্ণধার শ্যামল দাস বলেন, আমাদের প্রকাশনা থেকে মূলত শিশু-কিশোরদের বই প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ছড়া, ছোট গল্প ও উপন্যাস রয়েছে। আহসান হাবীব ও আনিসুল হকের বইয়ের চাহিদা বেশি থাকে। মেট্রোরেলের কারণে এবার মেলায় পাঠক-দর্শকের সমাগম বেশি হচ্ছে। ফলে মেলায় অন্য বারের চেয়ে এবার বিক্রি ভালো।

শুভ্র প্রকাশের কর্ণধার রতন কুমার দাশ বলেন, গতকাল (বুধবার) মেলায় দর্শক-পাঠকদের উপস্থিতি ছিল চোখের পড়ার মতো। বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে মেলার মাঠ। মনে হয় যেন ঢল নেমেছে মানুষের। মানুষ বেশি হওয়ায় বিক্রিও হয়েছে ভালো। যদিও আমার প্রকাশী থেকে শিশু-কিশোরদের প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তরুণ-তরুণীরাও বই কিনে নিয়ে যায়। আজ (বৃহস্পতিবার) বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি। শেষদিকে বিক্রি আরো বাড়বে বলে তিনি আশা করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close