উন্নয়নশীল আট দেশের জোট বা ডি-৮ ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষিপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য একটি ‘বহুদেশীয় সমন্বিত প্রকল্প’ নিতে বাংলাদেশের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে; যার মাধ্যমে ডি-৮ভুক্ত এসব দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি বিষয়ে যৌথ গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ করা হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা যেমন-আইডিবি, এফএও, ইরি, ইফাদ প্রভৃতি থেকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং পরিচালিত হবে। শিগগিরই এ প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা শীর্ষক সপ্তম ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের শেষ দিনে আট দেশের কৃষিমন্ত্রীরা এ বিষয়ে সম্মত হন ও ঢাকা ইনিশিয়েটিভ অনুমোদন করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা টেকসই রাখতে হলে জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ফসলের জাত ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণ বাড়াতে হবে।

ড. রাজ্জাক আরো বলেন, ডি-৮ দেশগুলো ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষিপ্রযুক্তির উন্নয়ন খুবই জরুরি। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে এটি খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। ডি-৮ভুক্ত দেশগুলোর কৃষি খাত ২৬ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান করে থাকে আর জিডিপিতে অবদান প্রায় ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া এ জোটের দেশগুলোতে ৬০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে এবং তারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কাজেই আজকের ঢাকা ইনিশিয়েটিভ ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষিপ্রযুক্তির উদ্ভাবন, বিনিময় এবং খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্যনিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সভায় ডি-৮-এর মহাসচিব ইসিয়াকা আব্দুল কাদির ইমাম, ইন্দোনেশিয়ার কৃষিমন্ত্রী সাইয়ারুল ইয়াসিন লিম্পু, ইরানের কৃষিমন্ত্রী সৈয়দ জেএস নেজাদ, মালয়েশিয়ার কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী রোনাল্ড কিয়ান্দি, পাকিস্তানের ফেডারেল মন্ত্রী সৈয়দ ফখর ইমাম, তুরস্কের পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আকিফ ওজকাল্ডি, নাইজেরিয়ার কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ফেডারেল মন্ত্রী মো. মাহমুদ আবুবকর এবং মিসরের এআরসির শিরীন আসেম কৃষিক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা, সম্ভাবনা, করণীয় ও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বক্তব্য দেন।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, এফএও, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইএফএডি, ইরি ও সিমিটের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

"