যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের অংশ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে পিটার হাস এ কথা উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের বৈঠক পূর্বনির্ধারিত, যা নিয়মিত বৈঠকের অংশ। আমাদের দুই দেশের চমৎকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সম্প্রতি ঘোষিত ভিসা নীতির প্রসঙ্গও এসেছে।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি ও আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) বিবৃতিতে যা দেখেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে পিটার হাসের সঙ্গে তিন দলের নেতাদের প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন দলের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ও কেন্দ্রীয় নেতা মো. এ আরাফাত। বিএনপির পক্ষে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ। আর জাতীয় পার্টির পক্ষে ছিলেন মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল।

বৈঠক শেষে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে পিটার হাসের বার্তা প্রচার করে। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে- এমন ব্যক্তিদের ভিসা সীমিত করার এই নতুন ভিসানীতি সবার জন্য প্রযোজ্য।’

বৈঠক থেকে বেরিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কোনো নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, তারই প্রতিফলন মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা (বস্তুত নতুন ভিসানীতি)। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে এটি একটা বড় পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই।’ জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন ভিসানীতির উদ্দেশ্য বোঝা গেছে, তারা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং নির্বাচন যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়। এ ব্যাপারে আমাদের দলও একমত।’

প্রসঙ্গত, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বুধবার এক বিবৃতিতে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেন। নতুন এই নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা না দেওয়ার কথা বলা হয়।

পিডিএস/মীর