reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ মার্চ, ২০২৪

ঝড়বৃষ্টির পরও জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঢাকার বাতাস

ছবি কোলাজ : প্রতিদিনের সংবাদ

মেঘ বৃষ্টির মধ্যেও রাজধানী ঢাকার বাতাসের মান নিয়ে নেই স্বস্তির কোনো খবর। প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণের মাত্রা; তেমনি মেগাসিটি ঢাকার বায়ুদূষণও দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কয়েকদিন ধরে শহরটির বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

শুক্রবারও (২২ মার্চ) আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ছবিটি সকালে মিরপুর দারুস সালাম রোড থেকে তোলা।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ১৯০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে। ঢাকার শুক্রবারের বাতাস অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৮৪ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় রয়েছে কাজাকিস্তানের আস্তারা শহর, ১৮৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, ১৭৪ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে সেনেগারের ঢাকার শহর এবং ১৭৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম নেপালের কাঠমান্ডু।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ১৯০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।

এদিকে ১৯ মার্চ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা তিন দেশের মধ্যে পাকিস্তান আগে থেকে থাকলেও, নতুন করে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, এই তিন দেশের বাতাসে যে পরিমাণ দূষিত কণা রয়েছে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি। বায়ুদূষণের ওপর ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট-২০২৩ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইকিউএয়ার। প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে পাকিস্তান দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। আফ্রিকার দেশ চাদ আর ইরানকে সরিয়ে যথাক্রমে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে বাংলাদেশ ও ভারত।

২০২৩ সালে বাংলাদেশের বাতাসে ‘ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার’ বা পিএম-২.৫ এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। পাকিস্তানের বাতাসে এর পরিমাণ ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাতাসে এটি থাকা উচিত ৫ মাইক্রোগ্রাম। বাতাসে এই পিএম ২.৫ বেশি হলে ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি সায়েন্স ম্যানেজার ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোয়েডার এই তিন দেশের ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণ সম্পর্কে বলেন,

জলবায়ু পরিস্থিতি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই তিন দেশে পিএম-২.৫ এর ঘনত্ব আকাশ ছুঁয়েছে। আরেকটি বড় কারণ হলো, দূষিত পদার্থের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বায়ুদূষণের অন্যান্য কারণ হলো-দেশগুলোর কৃষি ব্যবস্থা, শিল্পায়ন ও জনসংখ্যার ঘনত্ব।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঝড়,বৃষ্টি,একিউআই স্কোর,বাতাস,ঢাকা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close