reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ নভেম্বর, ২০২২

সাক্ষাৎকার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে শীর্ষস্থানে নিতে চাই : উপাচার্য ড. মো. নূরুল আলম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। গত সেপ্টেম্বরে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, বিশ্ববিদালয়ের উপ-উপাচার্য, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ কমিটি, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পিছিয়ে থাকা এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন প্রতিদিনের সংবাদের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি তহিদুল ইসলাম

প্রতিদিনের সংবাদ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : পরিকল্পনা তো শুধু করলে হবে না, এর বাস্তবায়নও করতে হবে। তাই বাস্তব ও বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা করতে চাই। সেশনজট মুক্ত, শিক্ষা ও গবেষণাধর্মী এবং আবাসিক হলগুলোতে গণরুম দূর করে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চাই। এজন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রতিদিনের সংবাদ : করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট তৈরি হয়েছে। সেশনজট নিরসনে কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : এটা বৈশ্বিক সমস্যা। সারা পৃথিবীতে বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। আমরা অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছি। বাকিটা কমানোর জন্য ইতোমধ্যে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে ফেলেছি সব ডিন ও শিক্ষকের সহযোগিতায়। শিক্ষকদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছি, যাতে তারা সময়মতো ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে খাতা দ্রুত মূল্যায়ন করেন এবং ফলাফল প্রকাশ করেন। ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।

প্রতিদিনের সংবাদ : আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পেছনের দিকে থাকে। এর কারণ কী বলে মনে করেন?

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : যেসব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে র‌্যাংকিং করা হয়, সেসব ক্ষেত্রে আমরা অনেকখানি পিছিয়ে আছি। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট এখনো ততটা আপডেট নয়। শিক্ষকদের গবেষণাগুলো ওয়েবসাইটে অনেক সময় আপডেট করা হয় না। গবেষণাগুলোর সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট কতটুকু, সেগুলোও তেমন পরিমাপ করা হয় না। সর্বোপরি এখন বিদেশি শিক্ষার্থী খুব একটা পড়তে আসে না, এটাও একটা মানদণ্ড। তবে এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা বাড়ছে। সুতরাং সামনে হয়তো র‌্যাংকিংয়ে ভালো করার সুযোগ তৈরি হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নতির কোন পর্যায়ে দেখতে চান?

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : উন্নতির কোনো শেষ নেই। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে আর গবেষণাধর্মী পড়াশোনা করালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি স্বাভাবিকভাবেই হবে। তবে এর জন্য ভালো মানের অবকাঠামোও প্রয়োজন। ভালো গবেষণা, ভালো আবাসন ব্যবস্থা, ভালো মানের শিক্ষক এসবরেই প্রয়োজন অ্যাকাডেমিক উন্নতির জন্য। এগুলো ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছি।

প্রতিদিনের সংবাদ : আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক স্তরে নতুন পাঠ্যক্রম চালু হতে যাচ্ছে। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে এই পরিবর্তনকে কীভাবে দেখছেন?

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : পরিবর্তন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে থাকে। পরিবর্তন ছাড়া প্রগতিও সম্ভব নয়। তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদেরও পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সে পরিবর্তনের ভার যাতে আমরা বহন করতে পারি, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষা অবশ্যই বাস্তবমুখী ও কর্মমুখী করতে হবে। জ্ঞান ও কর্মের সমন্বয় ঘটাতে হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ : বিশ্ববিদ্যালয় তথা সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন করা। শুধু সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত হলেই হবে না, জ্ঞানার্জনও করতে হবে। শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানের পাশাপাশি মানবিক গুণগুলোরও বিকাশ ঘটাতে হবে। শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে ভালোবাসতে হবে। একটি মানবিক ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম : আপনাকেও ধন্যবাদ।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,শীর্ষস্থান,উপাচার্য
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close