ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ ২৯ জুলাই, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৯১ সালের এই দিনে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৭০ বছর বয়সে কোলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর জন্ম ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে। ঊনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার ছিলেন বিদ্যাসাগর। তার প্রকৃত নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য প্রথম জীবনেই লাভ করেন বিদ্যাসাগর উপাধি। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষার উপর তার আধিপত্য ছিল বিস্তর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ করে তোলেন ও বোধগম্য করে তোলেন।
বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। রচনা করেছেন জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয় সহ, একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচনা করেছেন অসংখ্য বই। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে বর্ণপরিচয়, অন্নদামঙ্গল, কিরাতার্জ্জুনীয়ম্, শিশুপালবধ, কাদম্বরী, বাল্মীকি রামায়ণ, মেঘদূতম্, পোয়েটিক্যাল সিলেকশনস্, শকুন্তলা, সীতার বনবাস, রত্নপরীক্ষা, ব্রজবিলাস, বিধবা বিবাহ চলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব ইত্যাদি।
সংস্কৃত শাস্ত্রের বিরাট পণ্ডিত হয়েও পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। হিন্দু বিধবাদের অসহনীয় দুঃখ, তাদের প্রতি পরিবারবর্গের অন্যায়, অবিচার, অত্যাচারে গভীরভাবে ব্যথিত হয়ে এই বিধবাদের মুক্তির জন্য তিনি আজীবন সর্বস্ব পণ করে সংগ্রাম করেছেন।
১৮৫৬ সালে সরকার বিধবা বিবাহ আইনসিদ্ধ ঘোষণা করেন। তবে শুধু আইন প্রণয়নেই ক্ষান্ত থাকেননি বিদ্যাসাগর। তার উদ্যোগে একাধিক বিধবা বিবাহের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।