কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

  ২১ মার্চ, ২০২০

কেরানীগঞ্জে যুবলীগ কার্যালয়ের নামে জুয়ার আসর

ঢাকার কেরানীগঞ্জের গোলাম বাজার এলাকায় শ্রী শ্রী গোপীনাথ (আখরা) মার্কেটে যুবলীগ কার্যালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিরাতে বসে জমজমাট জুয়ার আসর। চলে রাতভর লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়াখেলা। সেই সাথে বসে মাদকের আসরও। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানা যুবলীগের সদস্য রতনের নেতৃত্বে চলে এই জুয়ার ক্লাবটি। অপর ক্লাবটি চলে থানা যুবলীগের সদস্য মোবারকের নেতৃত্বে। এই জুয়ার ক্লাবে নেই সবার প্রবেশাধিকার। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার মানুষ জুয়া খেলতে আসে এ ক্লাবে । মাঝে মাঝে মাদক কারবারীদের আনাগোনাও দেখা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায় ক্লাবের প্রথম কক্ষটিতে একটি টেবিলে চারজন বসে তাস খেলছে। তাদের উপরের দিকে তাকালেই দেখা যায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর দুটি ছবি সাটানো আছে। তার পাশের কক্ষটিতে প্রবেশ করতেই সিগারেটের ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন পরিবেশে, বেশ কয়েকজন ফ্লোরে বসে সামনে টাকা রেখে তাস খেলছে। সেখান থেকে বের হয়ে একটু এগুতেই হাতের বাম পাশে অপর একটি ক্লাবে একই রকম অবস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জুয়াড়ি বলেন, আমরা নিয়মিত এখানে খেলতে আসি। কখনও কোন পুলিশি ঝামেলা হয়নি। অপর একজন জুয়াড়ি জানান, প্রতি রাতে এখানে আনুমানিক একশ থেকে দেড়শ জন জুয়াড়ি আসেন। কয়েক লাখ টাকার খেলা হয়। মোবারকের নেতৃত্বাধীন ক্লাবটি সে নিজেই পরিচালনা করেন।

অপরদিকে রতনের নেতৃত্বাধীন ক্লাবটি লোক সমাগম বেশি হওয়ায় পরিচালনা করেন সোহেল নামে এক যুবক। সোহেল বলেন, জুয়ার আসর চালাতে গোলাম বাজার ফাঁড়ির পুলিশকে প্রতি রাতে টাকা দিতে হয়। কত টাকা দিতে হয় জানতে চাইলে সোহেল বলেন, এটা আমি জানি না। রতন ভাই বলতে পারবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, জুয়ার ক্লাবের পশ্চিম পাশের ১০০ গজের মধ্যেই গোলাম বাজার পুলিশ ফাঁড়ি। পূর্ব পাশের আধা কিলোমিটারে মধ্যেই ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশের কার্যালয় ও দক্ষিণ পাশের এক কিলোমিটারের মধ্যেই র‌্যাব ক্যাম্প। অথচ পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের চোখের সামনে প্রতি রাতে এত বড় জুয়ার আসর বসলেও তাদের কোনো ভূমিকা নেই। এলাকাবাসীর ধারণা, এই জুয়ার ক্লাবে এসে টাকা পয়সা হেরে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পরছে জুয়াড়িরা। গোলাম বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আলিমুজ্জামান বলেন, আমার জানামতে গোলাম বাজারে কোন জুয়ার ক্লাব নেই। যদি থেকে থাকে, তাহলে আমি দ্রুত এর বিপক্ষে ব্যবস্থা নেবো। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) রামানন্দ সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জুয়ার বিষয়ে কোন ছাড় নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জুয়া,ঢাকা,কেরাণীগঞ্জ,পুলিশ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close